Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ঋণ নবায়নে অনিয়ম, আর কোনো ছাড় নয়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঋণ নবায়নে অনিয়ম, আর কোনো ছাড় নয়

কয়েকজন প্রভাবশালী গ্রাহকের কূটকৌশলের কারণে দেশের ব্যাংক খাত রুগ্ণ হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশেষ ছাড়ের আওতায় পুনঃতফশিল করা ঋণের মধ্যে প্রতিবছর গড়ে ৩৭ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকার ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮০ শতাংশ খেলাপি হয়েছে বড় গ্রাহক। এসব ঋণ আবার নবায়ন করা হয়েছে। কৌশলে এ সুবিধাও নিয়েছেন বড় গ্রাহকরা। পরিশোধ না করেই ঋণের ওপর সব ধরনের সুদ মওকুফের সুবিধা নেওয়া, বিধি ভঙ্গ করে আয়ের খাতে ঘাটতি দেখিয়েও মাত্রাতিরিক্ত সুদ মওকুফ করানো-এসব ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা দরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশেষ ছাড়ে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪ হাজার ৬০ কোটি টাকার ঋণ ফের খেলাপি হয়েছে। এসব ঋণের একটি অংশ আবারও নবায়ন করা হয়েছে। আলোচ্য পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিবছর নবায়ন করা ঋণের ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ আবার খেলাপি হয়েছে। ওই সময়ে প্রতিবছর গড়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। খেলাপি বাড়ার চেয়ে নবায়ন করা ঋণ খেলাপি হয়েছে বেশি। তবে ঋণগুলোর বেশিরভাগই খেলাপি হিসাবে দেখানো হয়নি। যেগুলো খেলাপি দেখানো হয়েছে, সেগুলো আবার বিশেষ ছাড়ে নবায়ন করা হয়েছে। এদিকে ৫ বছরে ব্যাংক খাতে ১০ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঋণের সুদ মওকুফের নিয়ম মানা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, গত সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী গ্রাহকরা সময়মতো ঋণ পেলেও ভালো উদ্যোক্তারা চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পাননি। শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও কীভাবে ঋণ আবার নবায়ন করা হয়েছিল, সেসব ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন এ ধরনের ঋণ নবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। বস্তুত সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হলে ব্যাংকের নিট আয় কমে যায়। এতে আমানতকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এবং সরকারের রাজস্ব কমে যায়। কাজেই নিয়মবহির্ভূতভাবে যাতে গ্রাহকের সুদ মওকুফের ঘটনা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব অনিয়মে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। আগামীতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম