নাগরিক সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তি
বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজধানীর মতো স্থানীয় পর্যায়েও নাগরিক সেবা কার্যক্রমে অনেক ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত সরকারের আমলে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী সিটি ও পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের বরখাস্ত করা হয়।
ভেঙে দেওয়া হয় জেলা ও উপজেলা পরিষদ। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এখনো বহাল থাকলেও তাদের বেশিরভাগই পলাতক বা কাজে অনুপস্থিত। এ অবস্থায় সারা দেশে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবা নেই বললেই চলে। মানুষ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্বের সনদ ও অন্যান্য নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ইতোমধ্যে কেবল মেয়র ও চেয়ারম্যানদের স্থলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অল্পসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে রুটিন কার্যক্রম সচল রেখেছেন। এতে কাউন্সিলর, সদস্য ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধির শূন্যতা পূরণ হচ্ছে না। ফলে প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে নাগরিক সেবা কার্যক্রম।
এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ প্রয়োজন। বলা যায়, নাগরিক সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিগত সরকারের পতন হওয়ার দুই মাস হতে চলল। প্রথম কিছুদিন স্থানীয় সরকারের এমন বিশৃঙ্খলা বা অচলাবস্থা হয়তো মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু এতদিন পরও কেন সেগুলো সচল হচ্ছে না, শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না, তা এক বড় প্রশ্ন। এটা ঠিক, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তাই তাদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল নয়। এ বাস্তবতায় অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে, নাগরিকদের স্বচ্ছন্দ জীবনের স্বার্থে স্থানীয় সরকারের সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া। এক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে প্রয়োজনে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান ও অন্যান্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, যাদের দিয়ে নাগরিক সেবা কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হবে।
এতে জনগণ তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবেন। আমরা আশা করব, জনগণের নাগরিক সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত ও নির্বিঘ্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এদিকে দৃষ্টি দেবে।