ব্যাটারিচালিত রিকশা, সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীসহ দেশের সড়ক-মহাসড়কে নতুন সমস্যা হিসাবে যুক্ত হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। বেপরোয়া গতির এ যানবাহনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। বস্তুত এলোমেলো চলাচল, হুটহাট ঘোরানো, উলটোপথে চলাচলের কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। জানা গেছে, প্রধান সড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধ এবং সড়ক আইন মানার বিষয়ে কঠোর হচ্ছে পুলিশ। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এসব যানবাহন। রাজধানীতে টোকেনের বিনিময়ে চলে এসব অবৈধ যান। বস্তুত ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ না হওয়ার পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এসব রিকশার চালকরা বলছেন, তারা নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে টোকেন নিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন। গবেষণার তথ্যমতে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, এর প্রায় ২০ শতাংশই ঘটে ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে। অনুমোদিত যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকে। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আলোচনার সুযোগ থাকে না। ঝুঁকিপূর্ণ এ যানবাহনটি যাতে রাজধানীতে চলাচল করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়া উচিত।
বস্তুত এ যানবাহনগুলোর মূল সড়ক বা মহাসড়কে চলার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, সড়ক আইনেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থেকেও নেই-এমন এক অবস্থায় মূল সড়কে উঠে এসেছে এসব অবৈধ যানবাহন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেহেতু এটি এক বড় সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে, সেহেতু তাৎক্ষণিক স্বস্তির লক্ষ্যে মূল সড়ক থেকে এসব যানবাহন সরাতে হবে। পাশাপাশি নগরীর চার্জিং পয়েন্টগুলোতে (গ্যারেজ) পুলিশ প্রশাসন, বিআরটিএ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগে অব্যাহত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। যেসব ওয়ার্কশপে এসব অবৈধ যানবাহন তৈরি হচ্ছে, সেখানেও অব্যাহত অভিযান পরিচালনা করা দরকার। ব্যাটারিচালিত রিকশাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। কাজেই এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ উদাসীন থাকলে চাঁদাবাজির নতুন নতুন নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে, যা নাগরিকদের গলার কাঁটা হয়ে উঠবে। রাজধানীর বাইরে কোনো জেলায়ই পর্যাপ্ত ও মানসম্মত গণপরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ চাহিদা পূরণ করছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। তবে এ ধরনের যানবাহনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। রাজধানীর বাইরে যেসব ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, সেগুলোর কাঠামোর মানোন্নয়ন করে সড়কে চলাচলের উপযোগী করা দরকার।