Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)

মহানবির আদর্শই শান্তির সোপান

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি। এদিন মানবকুলের শিরোমণি আমাদের প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে সঠিক পথপ্রদর্শন করার জন্য যুগে যুগে নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি হলেন আমাদের প্রিয় মহানবি (সা.)। তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালিন-সব নবি-রাসূলের নেতা। নিখিল বিশ্বের নবি। তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন আরব দেশ নিমজ্জিত ছিল অশিক্ষা, অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের ঘোর তমসায়। সেই যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা অন্ধকারের যুগ। সেই বর্বর যুগে পাশবিক স্বভাবের তাড়নায় মানুষের মানবিক গুণাবলির অপমৃত্যু ঘটেছিল। এই নিকষ তমসা থেকে মানবজাতিকে পরিত্রাণ দিতে, আলোর পথে নিয়ে আসতে আল্লাহতায়ালা মহানবিকে (সা.) পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। মহান আল্লাহতায়ালা মুসলমান তথা সমগ্র মানবজাতির জন্য সর্বাপেক্ষা প্রজ্ঞাময়, কল্যাণকর, পরিপূর্ণ জীবনবিধান সংবলিত পবিত্রতম গ্রন্থ কুরআনুল কারিম নাজিল করেন মহানবির (সা.) ওপর। এই গ্রন্থ বিশ্ব মানবের ইহকাল, পরকাল ও সামগ্রিক কল্যাণের পথপ্রদর্শকরূপে এক সার্বজনীন, শাশ্বত ও পূর্ণাঙ্গ ধর্মগ্রন্থ।

আরবের ঊষর মরুপ্রান্তরে স্নিগ্ধ বারিধারার মতো শান্তি ও কল্যাণের পথপ্রদর্শক হিসাবে যে মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছিল, তিনি কেবল আরবেই নন, সারা বিশ্বে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। এ ছিল উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সব মানুষের সমমর্যাদার বিপ্লব। মানবতার বিপ্লব। মহানবি (সা.) তাঁর প্রচারিত ধর্ম ইসলামের মাধ্যমে এই পৃথিবীতে যে জাগতিক ও আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটিয়েছেন, তার প্রতি সশ্রদ্ধ স্বীকৃতি জানিয়েছেন পাশ্চাত্যের জ্ঞানী-গুণী পণ্ডিতরাও। মার্কিন ইতিহাসবিদ মাইকেল এইচ হার্ট তার আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে বিজ্ঞানসম্মত চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাসে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী যে একশজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির জীবন লিপিবদ্ধ করেছেন, সেই শ্রেষ্ঠ মনীষীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম হলেন আমাদের প্রিয় নবি (সা.)। পরিতাপের বিষয়, অনেক মুসলমান এখন মহানবির (সা.) আদর্শ থেকে বিচ্যুত। তারা কুরআনের শিক্ষা ভুলে গেছে। বিভিন্ন স্থানে মানুষ হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানিতে লিপ্ত। অনেকে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে চালাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জ্বলছে অশান্তির দাবানল। মানবিক অনুভূতি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মানুষ একে অপরকে নির্বিচারে হত্যা করার মতো নৃশংসতায় লিপ্ত। জনজীবনে দগদগে ক্ষতের মতো বাসা বেঁধেছে সন্ত্রাস। নৈরাজ্য আর অনিয়মই হয়ে যাচ্ছে নিয়ম। দুর্নীতি পরিণত হয়েছে সামাজিক আচারে। অথচ নবিজি (সা.) প্রবর্তিত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা হলো ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ ও মঙ্গল। প্রিয় নবি (সা.) মানুষের দুঃখ-কষ্ট বুকে পেতে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী। তিনি সমাজদেহ থেকে অন্যায়ের মূলোৎপাটন করেছেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) কেবল আক্ষরিক অর্থেই ইবাদত ও কুরআন পাঠের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেননি; মানবজাতির সার্বিক কল্যাণ ও শান্তির জন্য তিনি এর অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবনের কথাও বলেছেন। দয়ায়, ক্ষমায়, দানে-কর্মে, উদারতায়, মহত্ত্বে, জ্ঞানে ও ধর্মে প্রিয় নবি (সা.) সর্বকালে মানুষের আদর্শ। তার আদর্শ অনুসরণ করলে সব অশান্তি-অনাচারের যন্ত্রণা প্রশমিত হতে বাধ্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম