Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বিঘ্নিত নগরসেবা কার্যক্রম

সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপই কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিঘ্নিত নগরসেবা কার্যক্রম

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের বেশির ভাগ কাউন্সিলর পলাতক রয়েছেন। রোববার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, এ কারণে ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস থেকে জনগণ সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। জানা গেছে, দুই সিটির কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে দেওয়া সনদ ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সেবা কার্যক্রম তদারকি হচ্ছে না। বাস্তবতা অনুধাবন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে জন্মনিবন্ধন সেবা আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্থানান্তর করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, মেয়রদের অপসারণ করে কাউন্সিলরদের রেখে নগর প্রশাসন ও সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। কারণ, কাউন্সিলর পদে যারা রয়েছেন, তারা বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী। ওয়ার্ড পর্যায়ের এসব জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছেন; নানাভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ও মানুষের সম্পদ দখল করেছেন। দুই সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিষদের ৯৫ ভাগ কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের অনেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানুষ হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিল। কাজেই তাদের বহাল রেখে নগরসেবা কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, গেল ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। তবে কাউন্সিলরদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অবশ্য সরকার চাইলে এখন কাউন্সিলরদেরও অপসারণের ক্ষমতা রাখেন। আমরা মনে করি, নগরসেবা নিশ্চিত ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলমান থাকা অর্ধসমাপ্ত কাজ সমাধা করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার। জনসেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনে এসব কাজ আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্থানান্তর করা যেতে পারে। যেহেতু আঞ্চলিক কার্যালয়ে উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে দক্ষ কর্মী বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে, তাই আপৎকালীন এটাই হবে সর্বোত্তম পন্থা।

বলা বাহুল্য, আন্দোলন চলাকালে জনরোষে নগরের বেশ কয়েকটি কাউন্সিলর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে এসব কার্যালয় চালুর পদক্ষেপও নেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া এ সময়ে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পায়, মশার বিস্তার রোধে কাউন্সিলর অফিস থেকে মশা মারার ওষুধ ছিটানোর কাজ তদারকি করা হয়। যেহেতু কয়েকদিন ধরে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না, স্বাভাবিকভাবেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির শঙ্কাও জনমনে রয়েছে। মশা নিধনে তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াও দরকার। শুধু মশার ওষুধ ছিটানোই নয়, রাস্তাঘাট পরিষ্কার, জন্ম-মৃত্যু সনদসহ ১৪টি খাতে কাউন্সিলরদের সেবা দেওয়ার কথা। এসব সেবা আর যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই।

এটাও ঠিক, নগর পরিচালনার কাজটি জনপ্রতিনিধিদের দ্বারাই পরিচালিত হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপদের সময়ে আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হলেও সরকারের উচিত হবে যথাসম্ভব দ্রুত তা জনপ্রতিনিধিদের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া। সেজন্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নাগরিক সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে রাখতে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পরিচয় দেবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম