Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর পদক্ষেপ নিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিপাতে নগরীর নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পাহাড় ধসের সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ইতোমধ্যে পটিয়ায় মাটির দেওয়াল ধসে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৬ বছরে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে অবাধে পাহাড় কেটে জনবসতি গড়ে তুলেছে। এ সময়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড়ধসে আড়াইশ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে; আহত হয়েছেন অনেকে।

পাহাড়ের গায়ে জন্মানো বন-জঙ্গল ও গাছপালা এর অভ্যন্তরীণ বন্ধন মজবুত রাখে। পাহাড় কাটার কারণে সেই বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে পাহাড় ধসের মতো ঘটনা ঘটে। বস্তুত কিছু মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ডের ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটছে। পাহাড় ধসের প্রধান কারণ নির্বিচারে পাহাড় কাটা। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড় দখল করে বসতি গড়ে তুলেছেন, এ বিষয়টি বহুল আলোচিত। পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা গণমাধ্যমকে বলে থাকেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রশ্ন হলো, অভিযান পরিচালনা করা হলে পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না কেন?

পাহাড় কাটার পেছনে শুধু দখলদাররাই দায়ী নয়, বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নিয়ম না মেনে সরকারিভাবেও পাহাড় কাটা হয়। বাণিজ্যিক কারণে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়। ফলে পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে ধস প্রতিরোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। পাহাড় ধস ঠেকাতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা বন্ধ করা দরকার এবং ধসের আশঙ্কা রয়েছে এমন পাহাড় এবং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়া জরুরি। বহু মানুষ নিরুপায় হয় পাহাড়ের পাদদেশে এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করে। এ ধরনের মানুষের আবাসন সংকট দূর করতে সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবসৃষ্ট কারণে যাতে পাহাড়ধসের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ২০০৭ সালের মর্মান্তিক পাহাড়ধসের ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি পাহাড় ধসের বেশকিছু কারণ নির্ণয় করে কিছু সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি আরও কী করণীয় তা নির্ধারণ করে এ বিষয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম