Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

খাদ্যশস্য প্রকল্পে দুর্নীতি : অন্তর্বর্তী সরকারকে সবদিকেই খেয়াল রাখতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খাদ্যশস্য প্রকল্পে দুর্নীতি : অন্তর্বর্তী সরকারকে সবদিকেই খেয়াল রাখতে হবে

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বান্দরবান জেলা পরিষদে খাদ্যশস্য প্রকল্পের কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। এই প্রকল্পের অধীনে সাধারণত দাতব্য প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জা, রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য খাদ্যশস্য বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেল, বান্দরবান জেলা পরিষদের প্রায় ৭২০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য প্রকল্পের পুরোটাই লুটপাট করা হয়েছে।

উল্লেখ করা যায়, দেড় শতাধিক প্রকল্পের নামে খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যেগুলো ছিল অস্তিত্বহীন। অস্তিত্বহীন এসব প্রকল্পে কাগজপত্রে শস্য বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী, হিসাবরক্ষকসহ অনেকেই। ১ লাখ ২০ হাজার টন চাল এবং ৮০ হাজার টন গম তারা নির্বিঘ্নে ভুয়া প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়ে গেছেন। অর্থাৎ খাদ্যশস্যগুলো অস্তিত্বহীন প্রকল্পে যায়নি, গিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে। সেসব খাদ্যশস্যের বিক্রির টাকা সবাই মিলে ঢুকিয়েছেন পকেটে। জালিয়াতির একটি বড় প্রমাণ হলো, জেলার লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের একটি প্রকল্প ছিল দুলালপাড়া থেকে বেলালপাড়া পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের; কিন্তু আজিজনগরে দুলালপাড়া ও বেলালপাড়া নামে কোনো পাড়াই খুঁজে পাওয়া যায়নি। যুগান্তরের প্রতিনিধি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। হিসাবরক্ষক বলেছেন, চেয়ারম্যান স্যারের অনুমতি ছাড়া তিনি কিছু বলতে পারবেন না। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, অভিযোগগুলো অভিযুক্তরা এড়িয়ে চলেছেন, যা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে।

দেশে প্রকল্পের নামে লুটপাট ও অর্থ আত্মসাৎ নতুন কোনো ঘটনা নয়। ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে টাকা ও খাদ্যশস্য লুটপাট হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। সংঘবদ্ধ দুর্নীতিবাজরা নানা কায়দায় করেছে এসব অপকর্ম। বস্তুত দেশে দুর্নীতির এক ভয়াবহ রাজত্ব কায়েম হয়েছে। গত সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেও কার্যত কিছুই করা সম্ভব হয়নি। দেশে একদিকে সংঘটিত হয়েছে মেগা দুর্নীতি, অন্যদিকে জেলা-উপজেলায়ও মাইক্রো পর্যায়ে দুর্নীতি কম হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শপথগ্রহণের পর বলেছে, দেশ থেকে সব ধরনের অনাচার দূর করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর সরকার রাজনীতি ও অন্যান্য সংস্কারে হাত দেওয়ার কথা বলেছে। আমরা চাইব দুর্নীতি দমনও হবে তাদের অগ্রাধিকার। রাষ্ট্রের সর্বস্তর থেকে দুর্নীতি উচ্ছেদের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম