Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পুলিশি অভিযান: অপরাধী গ্রেফতারে যথাযথ তদন্ত কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পুলিশি অভিযান: অপরাধী গ্রেফতারে যথাযথ তদন্ত কাম্য

প্রতীকী ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত ক’দিনে সহিংস পরিস্থিতির সাক্ষী হয়েছে দেশবাসী। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে পুঁজি করে দুর্বৃত্তরা দেশব্যাপী ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হতাহতের সংখ্যাও কম নয়। এমন অবস্থায় কারফিউ জারির মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয় সরকারকে। নামানো হয় সেনাবাহিনী। এতে পরিস্থিতির উন্নতি যে হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। বর্তমানে পুলিশের ওপর হামলা, স্থাপনা ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়াসহ সহিংসতার পেছনে জড়িতদের গ্রেফতারে সারা দেশে অভিযান চলছে। বুধবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। দুষ্কৃতকারীদের দমনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসাবে গ্রেফতারের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ নির্বিচারে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। তাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান করা হচ্ছে।

নরসিংদীর জেলখানায় জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়াসহ সারা দেশে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যে আমাদের হতবাক করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি অহিংস আন্দোলনকে কীভাবে সহিংসতার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই জরুরি। ভুলে গেলে চলবে না, মাত্র ক’দিনের সংকটময় পরিস্থিতিতে শুধু জানমালের ক্ষয়ক্ষতিই যে হয়েছে তা নয়, সব খাতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ইতোমধ্যেই আমদানি-রপ্তানি, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, লেনদেন, পণ্য সরবরাহ এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সেবা খাতে স্বল্পমেয়াদি প্রভাব পড়েছে। এ অচলাবস্থার আশু সমাধান স্বাভাবিকভাবেই জরুরি, কারণ তা না হলে অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। আশার কথা, সরকারের তৎপরতায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অনুকূলে। তবে যারা সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে অর্থাৎ মদদদাতা ও বাস্তবায়নকারী; তাদের খুঁজে বের করা নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রয়োজন।

শুধু নরসিংদীর কথাই ধরা যাক। সেখানে অবস্থিত জেলখানায় দুষ্কৃতকারীদের হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে আট শতাধিক আসামিসহ অস্ত্রাগার লুটের ঘটনা অবশ্যই উদ্বেগজনক। কারাগার থেকে যেসব জঙ্গি সদস্যকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে না পারলে ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির শঙ্কা থেকেই যায়। একইভাবে যারা দেশে সহিংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা নিরাপত্তার স্বার্থেই জরুরি। মনে রাখতে হবে, সংঘাতময় পরিস্থিতি কারও জন্যই সুফল বয়ে আনে না। আমরা আশা করব, যারাই এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এ অভিযানে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন, সেদিকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নজর রাখতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ অভিযানে জনগণের কিছুটা ভোগান্তি হলেও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থেই দেশের সচেতন নাগরিক হিসাবে পুলিশকে সবাই সহযোগিতা করবেন, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম