Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পিএসসির অভিনব প্রশ্নফাঁস

প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পিএসসির অভিনব প্রশ্নফাঁস

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ অত্যন্ত দুঃখজনক। জানা যায়, ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। প্রশ্নফাঁস নিয়ে ইতোমধ্যে বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে। তবে এবারের প্রশ্নফাঁসের ধরনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে; প্রার্থীদের কোনো প্রশ্ন দেওয়া হয়নি। রাজধানীর একটি বাড়িতে রাতভর প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে; পরদিন সকালে প্রার্থীরা পরীক্ষার হলে গিয়ে রাতে মুখস্থ প্রশ্নের সঙ্গে সব প্রশ্নের হুবহু মিল পেয়েছেন। এজন্য প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের শনাক্ত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক ইউনিট অনুসন্ধানে নেমেছে। বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা গাড়িচালক কিংবা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশ্ন প্রণয়নকারী এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া পিএসসির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্নফাঁস হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গাড়িচালক কিংবা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, যারা চক্রে রয়েছে, তাদের বেশিরভাগই প্রশ্নপত্র সরবরাহ এবং প্রার্থী সংগ্রহের কাজে নিযুক্ত ছিল। প্রশ্ন হলো, এ অপরাধের মূলহোতা কে বা কারা?

জানা যায়, কলঙ্কমোচনে এ বিষয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ লক্ষ্যে সিআইডির পাশাপাশি পিএসসির গঠন করা তদন্ত কমিটিও কাজ করছে। কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা পর্যায়ের সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে; নানা কৌশলে চলছে তদন্তকাজ। প্রশ্নফাঁসের কলঙ্কের দাগ মুছতে পিএসসির মনোভাব ইতিবাচক। বস্তুত এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির সদিচ্ছা প্রকাশই যথেষ্ট নয়। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনতে যা যা করণীয় সবই করতে হবে।

দেশবাসী আশা করে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পাশাপাশি অতীতের নিয়োগবিষয়ক অভিযোগগুলোও পিএসসি খতিয়ে দেখবে এবং প্রশ্নফাঁস প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। দেশবাসী এটাও আশা করে, এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি কেবল লোকদেখানো দায়িত্ব পালনেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পিএসসি কর্তৃপক্ষ যে এ ক্ষেত্রে আন্তরিক, এটি দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট হওয়া দরকার। এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকাণ্ড এমন হতে হবে, তাদের নৈতিকতা যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সরকারি চাকরিতে যারা নিয়োগ পান, তাদের মেধা, দক্ষতা ও নৈতিকতা নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে, এটি নিশ্চিত হওয়া দরকার। যেভাবেই হোক শর্ষের ভেতরের ভূত তাড়াতে হবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম