Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

কর্মবীরের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী

অনিঃশেষ শ্রদ্ধা এবারও

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কর্মবীরের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী

দেশের শিল্পজগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, অন্যতম বৃহৎ শিল্পগ্রুপ যমুনা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান, দৈনিক যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২০ সালের এই দিনে আমাদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেছেন তিনি। আমরা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আজ তাকে স্মরণ করছি। তার মৃত্যু দেশের শিল্প ও সেবা খাতের জন্য একটি বিরাট দুঃসংবাদ বয়ে এনেছিল। দেশ যখন করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার লড়াইয়ে নিয়োজিত, তখন করোনায় আক্রান্ত হয়েই তিনি চলে যান সবাইকে ছেড়ে। এটি দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

নুরুল ইসলামের সবেচেয়ে বড় অবদান হলো, তিনি অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে কেবল দেশের অর্থনীতির ভিতকেই সুদৃঢ় করেননি, একইসঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। বর্তমানে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ কর্মরত রয়েছেন যমুনা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সেদিক থেকে দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনন্য। শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি ব্যবসার সব নিয়ম-কানুন ও শৃঙ্খলা মেনে চলেছেন। নিয়মের বাইরে একচুলও যাননি তিনি, সব প্রতিষ্ঠান নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করেছেন। অর্থনীতির ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক উভয় ক্ষেত্রেই রয়েছে তার অবদান।

নুরুল ইসলাম ছিলেন আধুনিক চিন্তার একজন সাহসী উদ্যোক্তা। তিনি ১৯৭৪ সালে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। এ গ্রুপে রয়েছে মোট ৪১টি প্রতিষ্ঠান। তিনি ছিলেন একজন সফল স্বপ্নচারী মানুষ। নিজের উদ্ভাবনী চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সচেষ্ট ছিলেন তিনি। এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক এর উদাহরণ। দেশের শিল্প ও সেবা খাতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যমুনা গ্রুপ। ইলেকট্রনিক্স, বস্ত্র, ওভেন গার্মেন্টস, রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, বেভারেজ টয়লেট্রিজ, নির্মাণ ও আবাসন খাতের ব্যবসায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই গ্রুপ। যমুনা টেলিভিশনেরও প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

নুরুল ইসলাম নীতির প্রতি ছিলেন একনিষ্ঠ। শুধু শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রেই নয়; সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি-সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। দেশে ঋণ খেলাপের সংস্কৃতি চালু থাকলেও তিনি এক্ষেত্রে ছিলেন এক বিরল ব্যতিক্রম। দৈনিক যুগান্তরকে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘সত্যের সন্ধানে নির্ভীক’ একটি সংবাদপত্র হিসাবে। সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছে যুগান্তর। এক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকদের সব ধরনের প্রতিকূলতার ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ দিয়েছেন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত যুগান্তর সেই নীতিতেই অটল রয়েছে। যুগান্তরের মতো বস্তুনিষ্ঠ খবর ও বলিষ্ঠ মতপ্রকাশে সাহসী ভূমিকা পালন করে আসছে যমুনা টেলিভিশনও।

দেশের শিল্প ও সেবা খাতে নুরুল ইসলাম যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন, সেজন্য তিনি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার যেসব স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি, তা পূরণে সচেষ্ট রয়েছেন তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই। আজ চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম