Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

আন্দোলনে দুর্ভোগ

সংকটের আশু স্থায়ী সমাধান হোক

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আন্দোলনে দুর্ভোগ

বর্তমান সময়টায় বৈষম্যমূলক কোটাবিরোধী আন্দোলনে দেশ, বিশেষত রাজধানী ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বুধবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ রাজধানীর ২৫টিরও বেশি পয়েন্টে অবরোধ ও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল সেদিন।

এছাড়া সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক, রেলপথে একই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার যানবাহন ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহণ ও ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছিলেন চাকরিজীবী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা। অনেককে দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে গাড়ি না পেয়ে হেঁটে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।

ওদিকে একই দিনে কোটা বহালের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে একাধিক সংগঠন। অর্থাৎ পরস্পরবিরোধী কর্মসূচিতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবরোধের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কোটাবিরোধী আন্দোলনে, বিশেষত রাজধানী প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। সংকটের সুরাহা হবে কীভাবে, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার এ আদেশ দিয়েছেন। এ রায়ের পরও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রায়ের ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণার বিপরীতে ছাত্রলীগ বলেছে, এ রায়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে।

আন্দোলনকারীরা বলেছেন, কোটা থাকলেও সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ থাকতে পারে, এর বেশি নয়। তারা আরও বলেছেন, আদালত নয়, নির্বাহী বিভাগ ও সংসদ থেকে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংকটের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। শিক্ষার্থীদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, কোটা নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের পরামর্শ দিন, তারা কেন নির্বাহী বিভাগের কথা বলেন; নির্বাহী বিভাগের যে কোনো সিদ্ধান্ত তো আদালতে চ্যালেঞ্জও হতে পারে।

তিনি আরও বলেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোনকারীদের জন্য আদালতের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। আমরা মনে করি, প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্য শুধু সংবিধানসম্মত নয়, এ বক্তব্যের প্রতি সবারই সমর্থন থাকা উচিত।

ওদিকে ছাত্রলীগের মধ্যে যে মনোভাব জন্ম নিয়েছে, তাতে অতীতের মতো একটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ছাত্রলীগ সভাপতি আন্দোলনকারীদের ব্লকেড থেকে সরে আসতে বলেছেন। আমাদের বক্তব্য, কোনো অবস্থাতেই যেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো ধরনের সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি না হয়। আন্দোলনকারীদের প্রতিও আহ্বান থাকবে, এমন কোনো কর্মসূচি যাতে দেওয়া না হয়, যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে। চলমান সংকটের একটা আশু যৌক্তিক সমাপ্তি ঘটুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম