Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অর্থনীতির চার চ্যালেঞ্জ, মোকাবিলায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থনীতির চার চ্যালেঞ্জ, মোকাবিলায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে

গত কয়েক বছর ধরেই দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নতুন অর্থবছরেও দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে প্রধান চারটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগোতে হচ্ছে।

এগুলো হলো-মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, বিনিয়োগ ও রাজস্ব আয়। দেশে বিদ্যমান বাস্তবতায় এসব খাতে লক্ষ্য অর্জন বেশ কঠিন। সদ্য বিদায়ি অর্থবছরেও এসব খাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, এসবের পাশাপাশি আরও কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে আইএমএফের শর্তের বাস্তবায়ন এবং এর প্রভাব মোকাবিলা। এছাড়া বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে আস্থার সঞ্চার করা, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি এবং তা ধরে রাখা, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক থেকে ইতিবাচক অবস্থায় আনা। অর্থ পাচার রোধ এবং হুন্ডির প্রভাব কমানোও বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অতীতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কেন কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যায়নি, তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে।

দেখা যাচ্ছে, ডলার সংকট মোকাবিলা করে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না; বরং অর্থনীতিতে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দেশে ১৫ মাস ধরে মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে। এত দীর্র্ঘ সময় মূল্যস্ফীতি মাত্রাতিরিক্ত থাকায় অর্থনীতিতে বড় ক্ষতের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে সবচেয়ে কষ্টে আছে স্বল্প ও মধ্য আয়ের ভোক্তারা। এ পরিস্থিতিতে বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দেশে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ডলার সংকট চলছে। এর প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন খাতে। নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ রয়েছে। গত মে থেকে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করে ডলারের দাম একদিনে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মধ্যে ডলারের বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করতে হবে। এর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টরা। এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে ২০২৬ সাল থেকে আমাদের আরও কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর কিছু আগাম প্রভাবও পড়তে পারে। এ বিষয়েও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থ পাচার, হুন্ডি, খেলাপি ঋণ সমস্যার সমাধানে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কেন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না, এটিও এক প্রশ্ন। এসব সংকট থেকে উত্তরণ এখন অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতেও চলছে নানা অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ নানাভাবে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়ে। কাজেই দেশে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ। কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে সুদের হার কমানো দরকার। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দক্ষ কর্মী তৈরি করার পদক্ষেপও নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম