সিন্ডিকেট ভাঙার তাগিদ
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বড় কারণ এটি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টানা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। বুধবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত বাজেটবিষয়ক সংলাপে বক্তারা বলেছেন, এ মুহূর্তে দেশের বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতির জন্য মুদ্রা ও রাজস্বনীতির চেয়ে বেশি দায়ী অসাধু সিন্ডিকেট। এক্ষেত্রে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ এবং সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। বক্তারা বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে হলে অর্থ পাচার ও অন্যান্য সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত উচ্চ মূল্যস্ফীতির মূল কারণগুলো চিহ্নিত, সমস্যার সমাধানে কী করণীয় তা-ও আলোচিত। কাজেই এ সমস্যার টেকসই সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ নিত্যপণ্য নিয়ে অব্যাহত কারসাজি। একের পর এক কারসাজির খবর পাওয়া গেলেও যারা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন-মজুত-সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেয়; পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটে। ভরা মৌসুমেও পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হয়। পণ্যের আমদানিনির্ভরতায় এ সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
এ সমস্যার সমাধানে বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ। শুধু তাই নয়, বাজার তদারকি সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাতের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। শর্ষের ভেতরের ভূত তাড়াতে কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। শর্ষের ভেতরে ভূত থাকলে যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, কাঙ্ক্ষিত সুফল প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। গরিব মানুষ যাতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে তা নিশ্চিত করতে নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজি করার চেষ্টা করলে তাকে চিহ্নিত করে সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। জীবনযাপনের প্রতিটি স্তরে অস্বাভাবিকভাবে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশে বহু মানুষ মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। যেভাবেই হোক, নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটমুক্ত করতে হবে।