রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত জনপদ
ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি জোরদার করুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় সরকারি উদ্যোগে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক এলাকায় এখনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি; বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
জলোচ্ছ্বাসে অনেক আঞ্চলিক সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এখনো বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। টানা ১২-১৪ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এমনকি সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত বিভাগীয় শহর বরিশাল অতিক্রম করতেও ঝড়টি সময় নিয়েছে প্রায় ১৩ ঘণ্টা।
এ সময়ে বাতাসের গতিবেগও ছিল উল্লেখ করার মতো। কাজেই এ ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সঠিকভাবে নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদান করা দরকার, যাতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। রিমালের ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ঝড়ের আঘাতে বিভিন্ন স্থানে নষ্ট হয়েছে ফসল ও মাছের ঘের। পর্যাপ্ত সহায়তা না পেলে বহু কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে পথে বসতে হবে।
ঝড়ের সময় যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে লক্ষ করা গেছে, ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় স্বজনপ্রীতি হয়েছে। কাজেই দলমতনির্বিশেষে ক্ষতিগ্রস্ত সবার হাতে সময়মতো যাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়, সেটা নিশ্চিত করা দরকার। এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এলে অনিয়ম ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাভাবিক সময়ে সুন্দরবনে ২৪ ঘণ্টায় দুবার জোয়ার ও ভাটা হয়।
রিমাল আঘাত হানার পর টানা ৪৮ ঘণ্টা পানিতে তলিয়ে ছিল পুরো বনাঞ্চল। এ অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে এ বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ।
এদিকে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের কয়েকটি উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। বন্যা বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তোলে।
বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষের প্রধান সমস্যা হিসাবে দেখা দেয় খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকট। এসব সংকট দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। প্রতিবছরই বন্যার কবলে পড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কাজেই বন্যা মোকাবিলার পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।