Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ট্রেজারি বিলের সুদে ঊর্ধ্বগতি

শিল্পায়নবান্ধব পদক্ষেপ কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ট্রেজারি বিলের সুদে ঊর্ধ্বগতি

দেশে চড়া মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আইএমএফ-এর পরামর্শে মুদ্রানীতি ব্যবহার করতে গিয়ে সরকারকে ঋণের সুদহার বাড়াতে হয়েছে। ফলে ‘পাগলা ঘোড়ার’ গতিতে বেড়েছে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার। মঙ্গলবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-গত দুই বছরে এর সুদ বেড়েছে সাড়ে তিনগুণের বেশি। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্যান্য ঋণের সুদহারও। একই সঙ্গে অন্যান্য বিল বন্ডের সুদহারও বেড়েছে। ফলে ব্যাংক খাতে এখন সুদ বাড়ার দৌড় চলছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ঋণগ্রহীতারা।

ট্রেজারি বিলের সুদ সাড়ে তিনগুণের বেশি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদ ৪ থেকে বেড়ে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও মূল্যস্ফীতির হার কমেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে দাম বাড়তে থাকে। তখন বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতিও বাড়তে থাকে। বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৯ শতাংশের ঘরে ওঠে, যা দেড় বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে। পরিতাপের বিষয়, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশ সুদহার বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।

উল্লেখ্য, দেশের বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন খাতে বাড়তি ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে বহু উদ্যোক্তা এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছেন। তার ওপর ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়লে শিল্প টিকিয়ে রাখাই কঠিন হবে। স্বভাবতই এভাবে সুদের হার বাড়তে থাকলে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হবে; বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমবে। কারণ, এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে; উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে এবং কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। ফলে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে দেশ। যারা অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সময়মতো উৎপাদনে যেতে ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের ওপর ঋণের বাড়তি বোঝা চাপলে খেলাপি হওয়ার আশঙ্কাও স্বভাবতই বেড়ে যাবে। এমন অবস্থায় আমরা মনে করি, উচ্চ সুদ দিয়ে কোনোভাবেই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা যাবে না। তাই সুদের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। তা না হলে উৎপাদন, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান-সর্বত্র এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দেশের শিল্প খাত যাতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির কথা বিবেচনায় নিয়েই ঋণের সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। উদ্যোক্তা ও ভোক্তার কথা চিন্তা করে সরকার ঋণের সুদহার কমানোর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম