Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

শিশু হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড

পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শিশু হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড

হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার বিষয়টি উদ্বেগজনক। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে শুক্রবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, আগুনে হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় আইসিইউ শয্যার সব ধরনের সরঞ্জাম ধ্বংস হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কয়েকটি ইউনিট একযোগে ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

অগ্নিকাণ্ডে হাসপাতালের রোগী, তাদের স্বজন, চিকিৎসক-নার্সসহ সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে বেশ কজন আহতও হন।

জানা যায়, শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় পার্শ্ববর্তী অন্য হাসপাতালের পানির রিজার্ভ ট্যাংক থেকে পানি আনা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আমরা আশা করব, সুষ্ঠু তদন্তে আগুন লাগার কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় কারও গাফিলতি চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হব।

সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডে সংঘটিত ট্র্যাজেডির কথা মানুষ ভুলতে পারেনি। এ কারণে অগ্নিকাণ্ডের খবরে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ-শিশু হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না। এত বড় হাসপাতালের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতির বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না।

হাসপাতালে রোগীরা যান চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার জন্য। সেখানে যদি তারা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার শিকার হন, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? শিশু হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের সময় পুরো হাসপাতালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

দেশে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ চিকিৎসাসেবার জন্য সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। এসব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মানুষের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশে প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং মানুষ হতাহত হয়। কাজেই এ ধরনের দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, অগ্নিকাণ্ড যেভাবেই ঘটুক, তা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়। কাজেই অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাসহ প্রত্যেকেরই সতর্ক থাকা দরকার।

বস্তুত প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডই মানুষের জন্য সতর্কবার্তা রেখে যায়। অগ্নিকাণ্ড এড়াতে প্রথমেই যে বিষয়টির ওপর নজর দেওয়া দরকার তা হলো, ভবনে পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া। ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকাই যথেষ্ট নয়, সেসবের ব্যবহার জানা কর্মী এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ থাকাও জরুরি। ভবনে কোনোভাবেই যেন বিপজ্জনকভাবে দাহ্য পদার্থ রাখা না হয়, সংশ্লিষ্টদের এটিও নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে এ ব্যাপারে নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোনো অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে কেমিক্যালের সংশ্লিষ্টতা থাকলে গতানুগতিক পদ্ধতিতে অগ্নিনির্বাপণে সাফল্য আসবে না। কাজেই বিভিন্ন ধরনের অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা এড়াতে কী করণীয়, মানুষকে তা জানাতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম