তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন: বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এর প্রমাণ আমরা পাচ্ছি প্রকৃতিতে। রাজধানীসহ সারা দেশে মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় পরপর তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল গত বুধবার, ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থায় সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাজধানীর তাপমাত্রা গত বেশ কয়েকদিন ধরে ৩৭ ডিগ্রিতে উঠছে। তীব্র গরমে স্বভাবতই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিশেষজ্ঞরা মানুষকে, বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ঘরের বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু জীবিকার তাগিদে মানুষকে বাইরে বের হতেই হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি মাসে দুই থেকে চারটি মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং এক থেকে দুটি তীব্র থেকে তীব্রতর তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। কাজেই এ মাসে সবারই উচিত চলাফেরায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা।
গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। বেড়ে যায় তাপমাত্রা। এ পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বিশেষ করে যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, যাদের হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের। এছাড়া ঊষ্ণ আবহাওয়ার কারণে সর্দিজ্বর এবং ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর চাপ বেড়েছে। জানা গেছে, প্রচণ্ড দাপদাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) বা কলেরা হাসপাতালে ভিড় করছে। শিশু হাসপাতালেও ভিড় বাড়ছে শিশু রোগীদের।
যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে শিশু, বেশি বয়স্ক ব্যক্তি এবং দরিদ্র তথা অপুষ্ট জনগোষ্ঠীর। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই তীব্র গরমে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। তারা রোদে পুড়ে, ঘাম ঝরিয়ে শ্রমের বিনিময়ে যে টাকা রোজগার করে, তাই দিয়েই তাদের পরিবার-পরিজনের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। আর এ সময় তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই নিজেদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রত্যেক সামর্থ্যবানের উচিত এই তীব্র গরমে শ্রমজীবী মানুষকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখা, তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়া।