ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম
সতর্ক থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে এপ্রিলে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম প্রলম্বিত হয়। এ-সংক্রান্ত এক জরিপের তথ্য প্রকাশ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, এ সময়ে শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের মধ্যে প্রতি চারজনে একজন ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হন। বলা যায় ঘরে ঘরেই ফ্লু। কাজেই এ ব্যাপারে সবার সতর্ক থাকা দরকার। ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ভাইরাসজনিত রোগ।
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে হঠাৎ করেই তীব্র জ্বর হয়, যা তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। রোগীর সারা গায়ে ও মাথায় তীব্র ব্যথা হতে পারে। এ রোগের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, আক্রান্ত ব্যক্তি প্রচণ্ড ক্লান্তিবোধ করেন। কারও দেহে এসব লক্ষণ দেখা দিলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অনেকে ইনফ্লুয়েঞ্জাকে তেমন গুরুত্ব দেন না, মনে করেন তিন-চারদিনে এমনিতেই সেরে যাবে। বাস্তবতা হলো, ইনফ্লুয়েঞ্জা কোনো মামুলি রোগ নয়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাঁপানি ইত্যাদি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে, ফ্লু হলে তাদের জটিলতা বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লু সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এ মৃত্যুর হার বেশি। কাজেই কারও ফ্লু হলে হেলাফেলা করা উচিত নয়।
ফ্লু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মৌসুম শুরুর আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়া উচিত। কারও জ্বর, সর্দি, কাশি হলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তা ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে এ মৌসুমে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে ফ্লু থেকে দূরে থাকা যায়।
যেমন-ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, মাস্ক পরা, কাশি দেওয়ার সময় শিষ্টাচার মেনে চলা। বস্তুত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালে এসব স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে জনগণ একরকম অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। সেগুলো আবার মেনে চলা উচিত। এতে শুধু ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা নয়, আরও অনেক সংক্রামক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।