অল্পের জন্য রক্ষা
বিমানবন্দরের রানওয়ে সর্বদা ঝুঁকিমুক্ত রাখতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পাইলটের দক্ষতায় ঈদের দিন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শতাধিক যাত্রী প্রাণে বেঁচে গেছেন। যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-এদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাঠমান্ডুগামী একটি ফ্লাইট (বিজি-৩৭১) উড্ডয়নের সময় চাকা ফেটে যায়। জানা যায়, রানওয়ের মধ্যে থাকা একটি লাইটবক্স ভেঙে বেরিয়ে আসার কারণে বিমানের দ্রুতগামী চাকায় আঘাত লেগে এ ঘটনা ঘটে। তবে টেকঅফের ঠিক আগ মুহূর্তে হওয়ায় বিমানটি পাইলটের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এ কারণে চাকার টায়ার ফেটে যাওয়ার পরও ফ্লাইটটি আকাশে উঠে যায়। পরবর্তী সময়ে পাইলট দক্ষতার সঙ্গে ফের বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হলে প্রাণে বেঁচে যান যাত্রীরা। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় পাইলটদ্বয় সাহসিকতার সঙ্গে যে কৌশলে বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করিয়েছেন, তা সাধুবাদযোগ্য।
দেশে এ ধরনের দুর্ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছরের গোড়ার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়নের মুহূর্তে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৬০২ ফ্লাইটের একটি চাকা ফেটে যায়। রানওয়েতেই এমন দুর্ঘটনায় যাত্রীরা বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পান। আমরা মনে করি, শুধু বিমানের ফিটনেসই নয়, উড্ডয়ন ও অবতরণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে রানওয়ের দিকেও প্রতিনিয়ত লক্ষ রাখা প্রয়োজন। স্মরণে আছে, গত বছরের মাঝামাঝিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ঝুঁকিমুক্ত রানওয়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের একটি পূর্বশর্ত হলেও অভিযোগ উঠেছিল, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির রানওয়ের পরিচ্ছন্নতার কাজ সুইপিং গাড়ির পরিবর্তে ঝাড়ু দিয়ে চালানো হচ্ছিল। এ ঘটনায় আমরা উদ্বেগও প্রকাশ করেছিলাম। তবে সেই উদ্বেগ ও কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ যে কাজে দেয়নি, সাম্প্রতিক ঘটনাই তার প্রমাণ।
পুনরায় বলতে হচ্ছে, নিরাপত্তার স্বার্থেই কর্তৃপক্ষকে উড়োজাহাজের ফিটনেস এবং বিমানবন্দরের রানওয়েসহ আনুষঙ্গিক বিষয় নিরাপদ রয়েছে কিনা তা নিশ্চিতে সদা সজাগ ও তৎপর থাকতে হবে। এর সঙ্গে জানমালের নিরাপত্তা তো বটেই, বিশ্বের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তির প্রশ্নও জড়িত। একইসঙ্গে আমরা আশা করব, যাদের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার কারণে এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। যাত্রীসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিমান ওঠানামাসহ সব ধরনের কারিগরি দিক দক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হবে এবং নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সব বিষয় খতিয়ে দেখে তবেই ফ্লাইট পরিচালনায় কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট থাকবে, এটাই প্রত্যাশা।