Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পবিত্র শবেকদর: তাৎপর্যময় হয়ে উঠুক এ রজনী

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পবিত্র শবেকদর: তাৎপর্যময় হয়ে উঠুক এ রজনী

মানবজাতির প্রতি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যত নিয়ামত, রহমত ও বরকত রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হলো লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। সহস্র মাসের ইবাদত বন্দেগিতে যে পুণ্য অর্জিত হয়, তার চেয়েও বেশি পুণ্য অর্জিত হয় এই বরকতময় রাতের এবাদত বন্দেগিতে। স্বয়ং আল্লাহপাক আল-কুরআনে এ রাতের মর্যাদা ও তাৎপর্য নিয়ে এরশাদ করেছেন-নিশ্চয়ই আমি এই কুরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এ রাতে ফেরেশতারা স্বীয় পালনকর্তার নির্দেশে অবতীর্ণ হন। পরম শান্তি বিরাজ করতে থাকে সূর্যোদয় পর্যন্ত (সূরা কদর)। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে-রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল কদরের এই রাত শুধু আমার উম্মতরাই পেয়েছে। অর্থাৎ মানুষের প্রতি আল্লাহপাকের যত নিয়ামত ও রহমত রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হলো এমন একটি বরকতময় রজনিকে তার বান্দাদের জন্য নসিব করা।

মহান আল্লাহতায়ালা এই পবিত্র রজনিতেই সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশী গ্রন্থ কুরআনুল করিম নাজিল করেন। এ কারণেই এই রাত এত বেশি মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ। পবিত্র কুরআন বিশ্ব মানবের ইহকাল ও পরকালের সামগ্রিক কল্যাণের পথপ্রদর্শক এক সর্বজনীন, শাশ্বত ও পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কুরআনের মাধ্যমেই বিশ্বজগৎ ও সৃষ্টি বৈচিত্র্যের রহস্য ও বৈজ্ঞানিক সত্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে লাইলাতুল কদরকে রমজানুল মুবারকের একটি রাত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, নবি করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনে লাইলাতুর কদর অনুসন্ধান করো (বুখারি শরিফ)। প্রিয় নবি (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ ১০ বেজোড় রাতগুলোর একটি। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাত। এজন্য নবি করিম (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। তবে ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই রমজান মাসের ২৭তম রাত অর্থাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাতকে পুণ্যময় মহিমান্বিত রজনি হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

কুরআনুল করিম নাজিল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, এটি একটি কিতাব যা আমি আপনার কাছে বরকত হিসাবে প্রেরণ করেছি; যাতে মানুষ এর আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তা করে এবং জ্ঞানীরা তা অনুধাবন করে। প্রিয় নবি (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই উৎকৃষ্ট যে নিজে পবিত্র কুরআন থেকে শিক্ষালাভ করেছে এবং অপরকেও শিক্ষা দিয়েছে। যিনি অন্যকে কুরআন শিক্ষা দেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করবেন। কুরআন মজিদের শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত ইমানদার করে তোলে; চরিত্রকে করে উন্নত। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে মানবিক অনুভূতির সমন্বয় ঘটিয়ে তাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে। এজন্যই পবিত্র কুরআন পড়ার সঙ্গে এর মর্মবাণী অনুধাবনেরও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কুরআনের মর্মবাণী অনুধাবন করলে মানুষ লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ, সন্ত্রাস, পাশবিকতা, ঘৃণ্য আচরণ, পরশ্রীকাতরতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবে। মানুষ হয়ে উঠবে গরিব-দুঃখীদের প্রতি দরদি ও সহানুভূতিশীল। এটিই পবিত্র কুরআনুল করিমের শিক্ষা। আজ রাতে মানুষ ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্র ও সামগ্রিকভাবে বিশ্ববাসীর কল্যাণে ইবাদত-বন্দেগি করে কাটাবে। এই ইবাদত কবুল করার জন্য আমরা মহান আল্লাহতায়ালার কাছে প্রার্থনা জানাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম