Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাইপ কাটারের আকাশচুম্বী দাম

তদন্ত হওয়া জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাইপ কাটারের আকাশচুম্বী দাম

মহেশখালীর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের ছোট ছোট কিছু যন্ত্রাংশ আমদানিতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) জন্য আমদানি করা যন্ত্রাংশ অতিরিক্ত দামে আমদানির অভিযোগ উঠেছে। এ কোম্পানি কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। জানা যায়, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সাড়ে ১৪ হাজার টাকা দামের দুটি পাইপ কাটার ৯২ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৬৬৮ টাকা দামের দুটি হাতুড়ি কেনা হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকায়। এ রকম ১৯টি আইটেমের বেশির ভাগেই অস্বাভাবিক ব্যয় দেখানো হয়েছে। এভাবে বাজারমূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ থেকে কয়েক শ গুণ বেশি দাম ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অস্বাভাবিক দাম দেখে আমদানি চালান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ আটকে দেয়। এরপর অনেক চিঠি চালাচালির পর তা ছেড়ে দেওয়া হয়। মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প পরিচালক ও সিপিজিসিবিএলের এক কর্মকর্তার দাবি, এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম হয়নি। চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার চালানটির শুল্কায়নের আগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সচিবের কাছে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, কায়িক পরীক্ষায় প্রাপ্ত পণ্যের ছবি দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, পণ্যগুলো সাধারণ হ্যান্ড টুলস, যা স্বল্পমূল্যের পণ্য হওয়াই যুক্তিযুক্ত। অর্থাৎ আমদানি পণ্যের চেয়ে ঘোষিত মূল্য পণ্যের রেফারেন্স মূল্য অপেক্ষা অস্বাভাবিক বেশি। জানা যায়, আমদানি করা যন্ত্রাংশগুলো বাণিজ্যিকভাবে প্রচুর আমদানি হয়। তাই বাজারে এসব পণ্য সহজলভ্য। চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানি ডেটাবেজে এ ধরনের পণ্য প্রচুর আমদানি ও শুল্কায়নের তথ্য রয়েছে। কাজেই সিপিজিসিবিএলের জন্য আমদানি করা যন্ত্রাংশগুলোর দাম কেন আকাশচুম্বী ধরা হয়েছে, তা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা তথা এর তদন্ত হওয়া জরুরি।

দেশে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে ‘বালিশকাণ্ড’ ও ‘পর্দা কাহিনি’র কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দেশের প্রায় সর্বত্রই দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে সর্বদিক বিস্তৃত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। দুর্নীতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে দুর্নীতির লাগাম কঠোর হাতে টেনে ধরা বাঞ্ছনীয়। এর মূলোৎপাটন করতে হলে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিকদের মধ্যে ন্যায়-নীতিবোধ, সততা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার পদক্ষেপও নিতে হবে। তা না হলে অনিয়ম-দুর্নীতির তালিকা দীর্ঘ হতে থাকবে। বস্তুত সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। আর এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম