Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

আবারও বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবি

দেশের নৌপথ ঝুঁকিমুক্ত করার পদক্ষেপ নিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আবারও বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবি

দেশে একের পর এক নৌ-দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। শুক্রবার ভৈরব থেকে ২০ জন যাত্রী ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চর সোনারামপুর ভ্রমণে যায়। সন্ধ্যায় সেখান থেকে একই ট্রলারে ফেরার পথে আশুগঞ্জ ও ভৈরব উপজেলার মাঝামাঝি মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলসহ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে ওই পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভৈরবে মেঘনা নদীতে ওই দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় নৌ-পুলিশ ট্রলারের ১২ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছিল। বস্তুত দেশের নদীপথে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম বাল্কহেড। কোনোরকম নিয়ম না মেনেই চলছে এসব নৌযান। দেশে কিছুদিন পরপরই বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। সরকারি হিসাবে ৪ হাজার ৭০০টি নিবন্ধিত বাল্কহেডের কথা বলা হলেও সারা দেশে চলছে ১০ হাজারের বেশি বাল্কহেড। এসব অবৈধ বাল্কহেড চলছে দক্ষ মাস্টারের পরিবর্তে অদক্ষ সুকানি দিয়ে। এসব নৌযানের ফিটনেসের বালাই নেই। বিভিন্ন নদীতে বেপরোয়া গতিতে চলা বাল্কহেডের ধাক্কায় প্রায়ই যাত্রীবাহী নৌযান ডুবলেও কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙছে না। নিবন্ধন না থাকায় কোনো বাল্কহেড দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেলে তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অবৈধ এসব নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।

অভিযোগ রয়েছে, নদী থেকে সাধারণত রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পর তা পরিবহণে বাল্কহেডগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব বাল্কহেডের বেপরোয়া চলাচলের রাশ টানতে কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সারা দেশের নদীগুলোতে ছোট-বড় বহু নৌযান চলাচল করছে। দেশের নৌপথ দিন দিন মানুষের চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন রুটে নৌযান চলাচলের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি চক্র। অবৈধ বাল্কহেড শনাক্ত করার পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন নৌযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। দেশে নৌযোগাযোগ খাতে মৌলিক নিরাপত্তার বিষয়গুলো কতটা উপেক্ষিত, তাও বহুল আলোচিত। যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্নে কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতাও স্পষ্ট নয়। দেশের নৌযোগাযোগ খাতে সার্বিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতি রোধে কর্তৃপক্ষ কঠোর না হলে দেশের নৌযোগাযোগ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম