কিউলেক্স মশার ভয়াবহ উপদ্রব
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কী করছে?
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![কিউলেক্স মশার ভয়াবহ উপদ্রব](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/03/18/image-785879-1710711933.jpg)
কর্তৃপক্ষের মশক নিধন কর্মসূচি অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও রাজধানীতে কিউলেক্স মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বস্তুত বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার-সর্বত্রই মশার উপদ্রব বেড়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জোর কার্যক্রম চালানো হচ্ছে দাবি করা হলেও ভুক্তভোগীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের কাজ শুধুই লোক দেখানো। এ মশার প্রধান প্রজননস্থল দূষিত ও বদ্ধ জলাশয়। এসব পরিষ্কার করা বা সেখানে ওষুধ ছিটানো সাধারণ নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এডিস মশা ডেঙ্গুর বাহক হওয়ায় মানুষ অতিসতর্ক থাকে। কিন্তু কিউলেক্সের ব্যাপারে তারা অনেকটাই উদাসীন। অথচ মশার এ প্রজাতি বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহন করে। মানুষকে রোগ-ব্যাধি ও অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, কয়েক মাস আগেই তারা কিউলেক্স মশা প্রজননের ভয়াবহ রূপ ধারণের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। প্রশ্ন হলো, দুই সিটি করপোরেশন তা আমলে নেয়নি কেন? কিউলেক্স মশার ভয়াবহ উপদ্রবের সময়ও সিটি করপোরেশন কার্যক্রমে কাঙ্ক্ষিত গতি দৃশ্যমান নয়। বর্তমানে অভিজাত এলাকায়ও মশক কর্মীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। এ থেকে বোঝা যায়, মশক নিধনে কর্তৃপক্ষ কতটা উদাসীন। কীটতত্ত্ববিদদের মতে, দেশে প্রায় ১২৩ প্রজাতির মশা রয়েছে। রাজধানীতে ১৬ প্রজাতির মশা বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে কিউলেক্স মশা প্রায় ৯০ শতাংশ। এ তথ্য থেকেই স্পষ্ট, কিউলেক্স মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের কতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
অতীতে লক্ষ করা গেছে, মশার উপদ্রব বাড়লে সিটি করপোরেশনের তোড়জোড়ও বাড়ে। কিন্তু এখন সেটাও লক্ষ করা যায় না। বস্তুত মশক নিধনের কাজটি বছরজুড়ে করা না হলে এর সুফল পাওয়া যায় না। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বক্স-কালভার্টগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে মশার ওষুধ ছিটানো যায় না। এছাড়া বিভিন্ন আবর্জনায় রাজধানীর ড্রেনগুলো ভরাট থাকে; এতে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়। এ জমাটবদ্ধ পানিতে কিউলেক্স বংশবিস্তার করছে। মশার এসব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান সড়কের পাশে ওষুধ স্প্রে করা হলেও ভেতরের গলিতে মশক নিধন কর্মীদের খুব একটা দেখা যায় না। মশক নিধনে কর্তৃপক্ষকে বছরব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বাসাবাড়ি ও এর আশপাশ এলাকা সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।