Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

কিডনি রোগের সর্বজনীন চিকিৎসা

কিডনি সুরক্ষা বিমার ব্যবস্থা করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিডনি রোগের সর্বজনীন চিকিৎসা

গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে কিডনি রোগসংক্রান্ত একটি ব্যতিক্রমী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচিত হয়েছে। বক্তারা বলেছেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল হয়েছে-এমন রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা যাবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বর্তমান অবস্থাটা হলো, ৮৫ কোটিরও বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং দুঃখজনক হলেও সত্য, এর মধ্যে ৭৫ কোটি রোগীই জানেন না যে, মরণঘাতী এ রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে দিচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর হার ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ। এ রোগের পরিণতি হলো কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হলো কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এ চিকিৎসা এতটাই ব্যয়বহুল যে, এমনকি মধ্যবিত্তদের পক্ষেও তা বহন করা সম্ভব হয় না। ফলে বিনা চিকিৎসায় অথবা আংশিক চিকিৎসায় মারা যান ৯০ ভাগ রোগী। চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব পর্যন্ত হয়ে গেছে।

সেমিনারে এ প্রেক্ষাপটে কী করণীয়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মূল প্রবন্ধে ‘কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ডা. এমএ সামাদ বলেছেন, উন্নত দেশগুলোয় ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন করা হয় স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে। রোগী অথবা তার পরিবারকে কোনো টাকা দিতে হয় না। তিনি আরও বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয়ও আংশিক খরচ বহন করে থাকে সরকার। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি, আমাদের দেশে কেন নেই এ ধরনের স্বাস্থ্যবিমা? সেমিনারের আলোচকদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরা বলতে চাই, অতিদ্রুতই আমাদের দেশে ‘কিডনি সুরক্ষা বিমা’ চালু করা প্রয়োজন। এর ফলে সব কিডনি রোগীকেই চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে এবং রোগীর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে। সেমিনারে জাতীয় অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ খান একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। বলেছেন, কিডনি রোগ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা প্রতিরোধের কথা বলি; কিন্তু মানুষ শুনছে না। তিনি বলেন, মানুষ কেন উপদেশগুলো শুনছে না, কীভাবে বললে তারা শুনবে, এ ব্যাপারে আমরা কেউ গবেষণা করিনি। তার এ কথার সূত্র ধরে আমরা এ ধরনের গবেষণা করার জন্য স্বাস্থ্যবিষয়ক বিজ্ঞজনদের তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাই। আমাদের শেষ কথা, যে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং যে রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা যায়, সেই রোগে মানুষ কেন মারা যাবে? আলোচ্য সেমিনারের বক্তব্যগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো তথা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম