Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা ও উত্তরণ

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশগুলো আমলে নিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা ও উত্তরণ

নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য এ মুহূর্তে জনগণের সবচেয়ে উদ্বেগ ও অস্বস্তির বিষয়। সার্বিক অর্থনীতিতেও এটি একটি বড় সমস্যা এখন। দ্রব্যমূল্য কমাতে এলসি মার্জিন শিথিল, খাদ্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক হ্রাস, বাজারে তদারকি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারপরও কমছে না নিত্যপণ্যের দাম। এ প্রেক্ষাপটে যুগান্তরের উদ্যোগে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয় গত বৃহস্পতিবার। এ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন বৈঠকের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বিশেষ অতিথি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং বিশেষজ্ঞ তিন বক্তা বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক এম কে মুজেরি, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান। তাদের বক্তব্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু পরামর্শ ও সুপারিশ উঠে এসেছে, যেগুলো আমলে নিয়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি আমরা।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, পণ্য সরবরাহ ঠিক না থাকলে আইন প্রয়োগ করে লাভ নেই। আমরাও মনে করি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সবার আগে বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখা দরকার। বাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে কারসাজি করে মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ কমে যায়। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, কেউ মজুতদারি করে মূল্যশৃঙ্খলে ব্যত্যয় ঘটালে তা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ বক্তব্যের যথাযথ বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি আমরা। এক্ষেত্রে আগে প্রয়োজন মজুতদারদের শনাক্ত করা। গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব সুপারিশ উঠে এসেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-ভোক্তা বা সমন্বয় মন্ত্রণালয় গঠন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় পৃথক ভোক্তা বিভাগ গঠন, অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, তথ্য-উপাত্তের গরমিল দূর করা, রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয় ঘটানো, কমুডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করা, পণ্যমূল্যের শৃঙ্খল প্রতিযোগিতামূলক করা ইত্যাদি। আমরা আশা করব, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে আন্তরিক হবে।

বস্তুত বাজারে এখন যা চলছে, অনেক ক্ষেত্রে তা স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর বলে মনে করেন ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে ইচ্ছামতো বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ক্ষুব্ধ ক্রেতারা একে ‘বাজার সন্ত্রাস’ নামেও অভিহিত করছেন। বাজারের এ পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। যেভাবেই হোক, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকারকে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, শক্তি প্রয়োগ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করেই বাজারের সব অনিয়ম ও অস্থিরতা দূর করতে হবে। কেউ অনিয়ম বা অপরাধ করলে আইনই তার সাজা নিশ্চিত করবে। সেই সঙ্গে ঢেলে সাজাতে হবে বাজার ব্যবস্থাপনা। বর্তমান বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা বা ত্রুটি আছে বলে মনে করি আমরা। সেগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হবে। ত্রুটিগুলো দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে পণ্যমূল্য শৃঙ্খলে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আরও মনোযোগী হবে, এটাই কাম্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম