
প্রিন্ট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১০ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত। চালের বাজারদর নিয়েও বহুদিন ধরে নানা কারসাজি চলছে। যারা কারসাজির হোতা, তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ অতীতে কখনোই নেওয়া হয়নি। এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, চালের বস্তায় ধানের জাত, প্রস্তুতকারী মিলের নাম, উৎপাদনের তারিখ এবং মিলগেটের মূল্য বাধ্যতামূলকভাবে লিখতে হবে। একইসঙ্গে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের জেলা ও উপজেলার নামও উল্লেখ করতে হবে। চালের বস্তায় লিখতে হবে ওজনের তথ্যও। ২১ ফেব্রুয়ারি জারি করা এ পরিপত্র আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এসব নির্দেশনা না মানলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে কোনো অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী অসাধু কোনো ব্যবসায়ীকে ক্ষতিকর কর্মে সহায়তা করলে কী শাস্তি হবে, পরিপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি।
লক্ষ করা গেছে, চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করে থাকেন। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ধরনের সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চালের বস্তায় বিভিন্ন তথ্য লেখা থাকলে ভোক্তারা বুঝতে পারবেন তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কিনা। বস্তায় সব তথ্যের উল্লেখ থাকলেই যে ভোক্তারা উপকৃত হবেন, তাও বলা যাবে না। কারণ সিন্ডিকেটের কারসাজির কাছে ভোক্তারা অসহায়।
আধুনিক চালকলগুলোয় চাল চকচকে করতে বেশি ছাঁটাই করা হয়। মানুষ এসব চাল খেয়ে বহু পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরিব মানুষ। কারণ তাদের পুষ্টির প্রধান উৎস ভাত। চালের পুষ্টি সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে ধান-চালের বাজারে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে কয়েকবার হাতবদল হয়। প্রতিবার হাতবদলের সময় যোগ হয় খরচ ও মুনাফা। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কারণেও চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির বিষয়টি বহুল আলোচিত। বস্তুত দেশের বাজারব্যবস্থা সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ কেবল দায়সারা নির্দেশ দিলে ভোক্তারা এর সুফল পাবে না। কেউ বাজারের শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনতে হবে। বাজারের অস্থিরতা রোধে এবং ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় যা যা করা দরকার, সবই করতে হবে।