Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

দূষণে মৃতপ্রায় ধলেশ্বরী: ট্যানারিশিল্পে সিইটিপি পুরোপুরি কার্যকর হতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দূষণে মৃতপ্রায় ধলেশ্বরী: ট্যানারিশিল্পে সিইটিপি পুরোপুরি কার্যকর হতে হবে

সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তর হওয়া ট্যানারি থেকে নির্গত বর্জ্যে ধলেশ্বরী নদীর দূষণ নিয়ে বহুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। এ দূষণ বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবতা হলো প্রতিদিনই নদীটির নতুন এলাকা দূষণের শিকার হচ্ছে। ট্যানারি থেকে নির্গত বর্জ্য পরিশোধন করে পানি নদীতে ফেলার বিষয়টি অনেকটা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করতে হাজারীবাগের চামড়াশিল্প সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এখন সাভারের চামড়াশিল্পের কারণে ধলেশ্বরীতে যেভাবে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কেবল ধলেশ্বরীই নয়, দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে আরও কয়েকটি নদী ও আশপাশের এলাকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্যানারির বর্জ্যে রয়েছে ক্রোমিয়ামসহ নানা বিষাক্ত রাসায়নিক, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নদীপারের বাসিন্দারা এক সময় এ নদীতে গোসল, মাছ ধরাসহ নানা প্রয়োজন মেটাতেন, যা এখন বন্ধ। এলাকাবাসীর মন্তব্য, দূষণের শিকার নদীগুলোর কুচকুচে কালো পানি গবাদিপশুর গোসল দেওয়ারও উপযুক্ত নয়। তবে এসব নদীর পানি সেচকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বস্তুত ট্যানারি থেকে নির্গত কঠিন ও তরল বর্জ্য নদীর পানিতে মেশার কারণে তা আমাদের খাদ্যচক্রেও প্রবেশ করছে। ট্যানারির বর্জ্যে যেসব রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, সেগুলো মানবদেহে প্রবেশ করলে কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় তা বহুল আলোচিত। বস্তুত ‘অকার্যকর’ কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কারণে যেসব সংকট তৈরি হচ্ছে, তার সমাধান না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এদিকে বৈশ্বিক ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে সব ধরনের পরিবেশবান্ধব সুবিধা না থাকায় পিছিয়ে পড়ছে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়াশিল্প।

জানা যায়, নির্মাণবাবদ চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করে বিসিক ‘অকার্যকর’ সিইটিপি বুঝে নেয়। পরে এটি কাগজে-কলমে সচল দেখানোর অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে বিসিকের কর্মকর্তারা। সিইটিপি অকার্যকর থাকায় ট্যানারির ক্রোমিয়ামযুক্ত অপরিশোধিত তরল বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে ধলেশ্বরী নদীতে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়িয়ে গেল কী করে? গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শনে ক্রোমিয়ামযুক্ত তরল বর্জ্য সরাসরি ধলেশ্বরীতে ফেলার প্রমাণ পান। ওই সময় পরিবেশ দূষণের দায়ে সাভার চামড়াশিল্প নগরীর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হয়েছিল। এমন ভয়াবহ মাত্রায় পরিবেশ দূষণের দায়ে কি কেবল জরিমানা করাই যথেষ্ট? যেহেতু এ সমস্যার সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি সরাসরি জড়িত, সেহেতু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম