ফলেও সিন্ডিকেটের থাবা
অতি মুনাফালোভীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ করা যাচ্ছে, রোজার আগে সব ধরনের ফলের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। অতীতে বাজার তদারকি সংস্থাগুলো নানারকম আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের বাড়তি দামেই ফল কিনতে হয়েছে। ডলার সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে খেজুরসহ সব ধরনের বিদেশি ফল এমনিতেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
জানা গেছে, ফলের আমদানিকারক সিন্ডিকেট এবারও রমজান ঘিরে বাড়তি মুনাফার ছক তৈরি করছে; আমদানি পর্যায় থেকে ইতোমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে দাম, যে কারণে পাইকারি পর্যায়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুরসহ বিভিন্ন ফল। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এতে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এ পণ্য বাদ দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি দামে ইফতারে ফল কিনে খাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন ভোক্তারা। বুধবার রাজধানীর পাইকারি আড়ত বাদামতলীতে ক্রাউন আপেল ১৮ কেজির বাক্স বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ টাকায়, যা গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকায়। পাইকারি আড়তে ১৮ কেজির বাক্সে মাল্টা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকায়, যা গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬০০ টাকায়। চায়না কমলা, বিভিন্ন জাতের খেজুর ইত্যাদির বাজারমূল্য গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে বাজারে চাহিদার তুলনায় খেজুরের মজুত পর্যাপ্ত। রাজধানীর ফলের পাইকারি আড়তের বিক্রেতাদের অভিযোগ-আমদানিকারকরা খেজুরের বাজার অস্থির করে তুলেছেন।
রোজার মাসে দেশি ফলের চাহিদাও বেড়ে যায়। লক্ষ করা গেছে, সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে এ সময় দেশি ফলের বাজারও অস্থির হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একই মানের ফল একেক এলাকায় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এসব বিষয় তদারকি সংস্থার দৃষ্টি এড়িয়ে যায় কী করে? কেউ ফলের বাজার অস্থির করার চেষ্টা করলে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধে অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। দেশে বিদেশি ফলের উৎপাদনেও জোর দিতে হবে। আমাদের দেশের মাটি ও আবহাওয়া বহু বিদেশি ফল চাষের উপযোগী, এটা প্রমাণিত। ভবিষ্যতে আমদানি কমাতে বিদেশি ফল চাষে আগ্রহী চাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া দরকার।