শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি
কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সরকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা নানা সময়ে আলোচিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এর বাইরে নেই। মঙ্গলবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ বছর আগে নিয়োগ পাওয়া এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওই সহযোগী অধ্যাপকের বিষয়ে জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। নিয়োগবঞ্চিত অপর এক শিক্ষকের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি এই পত্র দিয়েছে।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ-২০১২ সালে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর দুই দফায় পদোন্নতি নিয়ে বর্তমানে তিনি সহযোগী অধ্যাপক পদে আছেন। এ পদোন্নতিতেও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এরই মধ্যে তিনি কয়েকবার শিক্ষক সমিতির নেতাও নির্বাচিত হয়েছেন। এ বিষয়ে ইউজিসির উপসচিব স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের হালনাগাদ তথ্য সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে হবে।
বিষয়টি শুধু দুঃখজনকই নয়, উদ্বেগেরও বটে। যে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার স্বার্থে স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা জরুরি। এটা হতে হবে এমন ব্যবস্থাপনা, যাতে কেউ চাইলেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসৎ অভিপ্রায়ে হস্তক্ষেপ করতে না পারে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষক নিয়োগে এমন অনিয়ম আরও ঘটেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। যে কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের মাঝ থেকে মেধাবীদের খুঁজে নিতেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়, যাতে যোগ্য ব্যক্তি দ্বারা কর্মস্থলের শূন্য পদটি পূরণ হয়। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থীকে খুঁজে বের করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নিয়োগের পর তাদের কাঁধে মানুষ গড়ার দায়িত্ব চলে আসে। যদি সেই প্রক্রিয়ায় কোনোরূপ অনিয়ম ঘটে তাহলে শুধু যে যোগ্য ব্যক্তির প্রতিই অবিচার করা হয় তাই নয়, শিক্ষার্থীরাও যোগ্য শিক্ষকের পাঠ থেকে বঞ্চিত হয়। এর প্রভাব বৃহত্তর অর্থে সমাজের ওপরও পড়ে। যথাযথ তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উল্লিখিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে, এটাই প্রত্যাশা। একই সঙ্গে আমরা চাইব, দেরিতে হলেও বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সব ধরনের দুর্নীতি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।