খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু: সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচার হোক

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী সেবা প্রদান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, এ হাসপাতালে সোমবার সকাল থেকে জরুরি কিংবা বহিঃবিভাগে কোনো রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। আগে ভর্তি হওয়া কিছুসংখ্যক রোগী ইউনাইটেড হাসপাতালের অন্য শাখায় স্থানান্তর করা হয়েছে এবং বাকি রোগীদের ইচ্ছামতো যে কোনো হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে ৮ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এদিকে আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
সুন্নতে খাতনা করাতে গিয়ে ৫ বছরের আয়ানের মৃত্যুর বিষয়টি উদ্বেগজনক। অভিযোগ উঠেছে, ৩১ ডিসেম্বর আয়ানকে ফুল অ্যানাসথেসিয়া (জেনারেল) দিয়ে সুন্নতে খাতনা (মুসলমানি) করিয়েছে উল্লেখিত হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক। চেতনা না ফেরায় সেখান থেকে শিশু আয়ানকে পাঠানো হয় ইউনাইটেড হাপাতালের অন্য শাখায়। সেখানে পিআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রেখে ৮ দিন পর আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মানুষ এমন মৃত্যুর সংবাদ শুনতে চায় না। আয়ানের মৃত্যর ঘটনাটির দ্রুত তদন্ত হওয়া দরকার। তদন্তে যারা দোষী বলে প্রমাণিত হবে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
জানা যায়, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গত বছরের আগস্টে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও ত্রুটি থাকায় আবেদনটি অনুমোদিত হয়নি। নিবন্ধনহীন কিংবা ত্রুটিপূর্ণ নিবন্ধন নিয়ে দেশে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সেবা প্রদান করতে গিয়ে অতীতে বহু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছে। লক্ষ করা গেছে, বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর জানা যায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনহীন কিংবা এর নিবন্ধন ত্রুটিপূর্ণ। বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানের সময় বহু নিবন্ধনহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অভিযানের সময় সারা দেশে বহু বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকের সন্ধান পাওয়া গেলেও কেন অভিযান অব্যাহত থাকে না, এটি একটি প্রশ্ন। দেশে যাতে নিবন্ধনহীন কোনো বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সেবা প্রদান করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। শিশু আয়ানের মৃত্যুর মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে।