পণ্যের ভরা মৌসুমেও স্বস্তি নেই
অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনুন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাজারে আমন চাল ও শাক-সবজির এ ভরা মৌসুমেও এসব খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। নতুন আমন ওঠায় স্বভাবতই এখন চালের দাম কমার কথা। কিন্তু দাম না কমে বরং বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলাররা সুযোগ বুঝে দাম বাড়ানোর কারণে সৃষ্টি হয়েছে এ অবস্থা। দেশীয় পেঁয়াজে বাজার এখন ভরপুর। সরবরাহও পর্যাপ্ত। কিন্তু আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি দেখিয়ে দেশীয় পেঁয়াজের দামও বাড়ানো হচ্ছে। আমদানিকারক ও আড়তদারদের কারসাজির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। বস্তুত অসৎ ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে এদেশের বাজারে এখন অর্থনীতির কোনো সাধারণ সূত্রই কাজ করছে না। পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও, এমনকি নতুন পণ্য উঠলেও সেসবের দামও ক্রমাগত বাড়ছে। বলা যায়, সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। কোনো নিত্যপণ্যের ব্যবসাই যেন এখন আর সিন্ডিকেটমুক্ত নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে অতি মুনাফা লুটছে-এসব কি দেখার কেউ নেই? বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেননি। তাই নবগঠিত সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে দেশবাসী। নতুন সরকার মূল্যস্ফীতি তথা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রথম অগ্রাধিকার দিয়েছে। কাজেই যেভাবেই হোক, বাজারে বিদ্যমান অরাজতা রোধে তাদের সক্ষম হতেই হবে।
বস্তুত বাজারে এখন যা চলছে, তা অরাজকতার পর্যায়েই পড়ে। অসৎ ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে ইচ্ছামতো বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্ষুব্ধ ক্রেতারা একে ‘বাজার সন্ত্রাস’ নামে অভিহিত করছেন। বাজারের এ পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। যেভাবেই হোক, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকারকে। অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তি দিতে হবে। অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই দিন দিন তাদের লোভ বাড়ছে, তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া। মনে রাখতে হবে, এই অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অপরাধী, তাদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি। এদের বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর অভিযান শুরু করা দরকার। আমরা মনে করি, অসাধু ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা প্রকাশ করে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। সেই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনাও ঢেলে সাজাতে হবে।