কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ
প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অবসান হোক
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
নির্ধারিত মেয়াদকালে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় দফায় দফায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ে জনদুর্ভোগও। জানা যায়, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুনঃস্থাপন প্রকল্প কাজের সম্প্রতি কিছুটা গতি বাড়লেও চতুর্থ দফা বর্ধিত মেয়াদেও শেষ হচ্ছে না রেলপথের কাজ। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে এ বর্ধিত মেয়াদ। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়নি ৩০ শতাংশও। এরই মাঝে পঞ্চম দফা মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ব্রিটিশ-ভারত সরকার আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের অংশ হিসাবে ১৮৯৬ সালে চালু করে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেল সেকশন। এটি ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। দীর্ঘদিনের পুরোনো এ রেলপথ ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০০৩ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। রেলপথটির সংস্কার করে আবার ট্রেন চালুর দাবিতে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে বিদ্যমান মিটার গেজ লাইন সংস্কারের লক্ষ্যে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যার কাজ ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। পরে এ প্রকল্পে যুক্ত হয় ভারত; কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটি ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তও হয়। প্রকল্প অনুমোদনের কয়েক বছর পর ২০১৭ সালের নভেম্বরে ভারতীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সিঙ্গেল লাইনের ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। সে সময় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭৮ কোটি টাকা। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক জানান, ‘নতুন করে চতুর্থ দফায় কাজের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।’ এ মেয়াদেও প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরেক দফা মেয়াদ বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রখেছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি ও ব্যয় বৃদ্ধি দুটিই অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের দেশের সম্পদ সীমিত। কাজেই প্রকল্প পরিকল্পনা করতে হবে দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা মাথায় রেখে। সব প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সময় অহেতুক ব্যয় যাতে না বাড়ে সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সব ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ও সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্যও নিতে হবে যথাযথ উদ্যোগ।