Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

টাউট আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ

যুগোপযোগী ও কঠোর শাস্তির বিধান কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

টাউট আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ

সরকারি প্রায় সব সেবা প্রতিষ্ঠানে দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। সামান্য অর্থের বিনিময়ে জনসাধারণের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালের কারণে পদে পদে গুনতে হয় বাড়তি অর্থ, হতে হয় হয়রানির শিকার। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তাতে জনগণের স্থায়ী স্বস্তি মেলে না।

এমন পরিস্থিতিতে ১৪৫ বছরের পুরোনো ‘টাউট আইন, ১৮৭৯’ হালনাগাদের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ আইনের আওতায় থাকছে আদালত, থানা, হাসপাতাল, ভূমি, রাজস্ব, রেজিস্ট্রি, পাসপোর্ট অফিস ও সরকারি লাইসেন্স প্রদানকারী দপ্তর। তাছাড়া রোড ট্রান্সপোর্ট অফিস, রেলওয়ে স্টেশন, টার্মিনাল, পাবলিক রিসোর্ট ও সরকারি সেবা প্রদানকারী যে কোনো অফিসে দালালদের তৎপরতার বিষয়ও আইনটিতে উল্লেখ থাকবে। এ আইনে অর্থদণ্ড ও সাজার মেয়াদ বৃদ্ধির চিন্তাও চলছে। তাছাড়া পুরোনো আইনের বেশকিছু বিষয় যুগোপযোগী এবং নতুন করে সংযুক্ত করা হচ্ছে।

জানা যায়, আগের আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি তিন মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড, যা অপর্যাপ্ত। তাই বিভিন্ন দপ্তরের টাউট বা দালালদের প্রকাশ্য তালিকা প্রণয়নের বিধান রাখার পাশাপাশি সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনের প্রয়োগ যাতে বাড়ে, সেজন্যও করণীয় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। তবে আইনটি কার্যকর করতে হলে শাস্তির মেয়াদ ও জরিমানার অর্থের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

আইনটি সময়োপযোগী ও যথাযথ প্রয়োগ হলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে। সেবাগ্রহীতাদের ভেতর কিছুটা হলেও ফিরবে স্বস্তি। মনে রাখা প্রয়োজন, যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধের ধরনেও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অনেক কিছু ডিজিটালাইজড হয়েছে। সুতরাং যুগোপযোগী করতে হলে আইনেও অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। প্রয়োজনে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়টি আইনে সংযোজন করতে হবে।

আমরা মনে করি, অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে এমন আইন আরও আগেই প্রণয়নের প্রয়োজন ছিল। দেরিতে হলেও যদি তা যুগোপযোগী হয় তবে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে প্রাপ্য সেবা পেতে সাধারণ মানুষের হয়রানি অনেকাংশেই লাঘব হবে। এর ফলে জনগণ সেবা গ্রহণে আগ্রহী হবেন এবং এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি পাবে। আবার কেউ প্রতারিত হয়ে আইনের দ্বারস্থ হলে ন্যায্য প্রতিকারও পাবেন। এতে অপরাধীদের অপকর্মের প্রবণতাও হ্রাস পাবে। দালাল ও প্রতারকদের অপরাধকর্মে নিরুৎসাহিত করতে সরকার যথাযথ শাস্তির বিধান রেখে আইনটি পাশ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম