Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

থার্টিফার্স্টে ফানুসের ব্যবহার

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

থার্টিফার্স্টে ফানুসের ব্যবহার

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে থার্টিফার্স্ট নাইটে কিছু মানুষ যে ধরনের উন্মত্ত আচরণে মেতে ওঠে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এ বছরও থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্যাপনের সময় রাজধানীতে বেপরোয়া আতশবাজি ফোটানো এবং ফানুস ওড়ানোর খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায, মেট্রোরেলের লাইনের তারে আটকে থাকা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ফানুস অপসারণ করা হয়েছে। এটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারত। গত কয়েক বছর ধরেই থার্টিফার্স্ট নাইটে আতশবাজির বিকট শব্দে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি ও রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গত বছর জন্মগতভাবে হৃদ্যন্ত্রে ছিদ্র থাকা এক শিশু থার্টিফার্স্ট নাইটে আতশবাজির শব্দে কীভাবে ফটফট করেছে, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হয়েছিল। পরদিন শিশুটির মৃত্যুর খবর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। থার্টিফার্স্ট নাইটে যারা বেপরোয়া আচরণ করে, এসব খবর কি তাদের বিবেক স্পর্শ করে না?

এবার থার্টিফার্স্ট নাইটে রাজধানীসহ সারা দেশে আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ফানুস ওড়ানো-এসব কারণে অতিষ্ঠ হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে রাতভর পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। একই রাতে ফানুস ওড়াতে গিয়ে রাজধানীতে তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। কামরাঙ্গীরচরের একটি বাসার ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

দগ্ধদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জাতীয় জরুরি সেবা সূত্রে জানা যায়, ফোন কল পেয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর গুলশান, রামপুরা, বাড্ডা, ইস্কাটন গার্ডেন, বাংলামোটর, মগবাজার, মহাখালী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মাঝেমধ্যে পটকা ফোটানোর শব্দ পাচ্ছিলেন তারা। রাত ১২টার আগে-পরে তা বেড়ে যায় বহুগুণ। কোনো কোনো এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত বেপারোয়া আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়। বাসাবাড়ির ছাদ ও ফাঁকা জায়গা থেকে ফানুস ওড়াতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আইন অনুসারে লাইসেন্সধারী ছাড়া কেউ পটকা ফোটাতে পারে না। কাজেই আইন অমান্যকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শুধু নিষেধাজ্ঞা জারি করে বা নির্দেশনা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব শেষ করলে এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। কাজেই এ ঘটনা প্রতিরোধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। থার্টিফার্স্ট উদ্যাপনকালে অনেক স্থানে লেজার রশ্মির ব্যবহারও দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, এটিও একটি বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে বিমানবন্দরের আশপাশে লেজার রশ্মির ব্যবহার ফ্লাইট ওঠানামার সময় পাইলটকে বিভ্রান্ত করতে পারে। এটি পাইলটের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়ারও কারণ হতে পারে। যত্রতত্র লেজার রশ্মির ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। কেউ এ বিধিনিষেধ অমান্য করলে তাকে আইনের আওতায় আনা দরকার। থার্টিফার্স্ট নাইটে কেন লেজার রশ্মির ব্যবহারের প্রচলন হলো, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এসবের সহজলভ্যতা দূর করতে হবে। ফানুসের উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে কেবল নিষেধাজ্ঞা আরোপে কতটা সুফল মিলবে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম