Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ক্রমাগত নিম্নমুখী রিজার্ভ

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে জোর দিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ক্রমাগত নিম্নমুখী রিজার্ভ

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। নভেম্বর শেষে গ্রস নিট রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ আরও কম। গত জুন শেষে রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।

পাঁচ মাসের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার কমেছে। বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে চার মাসের কিছু কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভ রয়েছে ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির জন্য বাংলাদেশের প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহে সংস্থাটির বোর্ড সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে।

বোর্ড সভার সময়সূচি অনুসারে, ১২ ডিসেম্বর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কিস্তি পেলে কিছুটা বাড়বে দেশের রিজার্ভ। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৩২৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা আসার কথা রয়েছে। করোনার সময় দেশে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় আসে।

ডলার বাজার ও দাম স্থিতিশীল রাখতে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজার থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০২১-২২ অর্থবছর রিজার্ভ থেকে মোট ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক; গত অর্থবছর (২০২২-২৩) বিক্রি করে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এ ধারা অব্যাহত আছে চলতি অর্থবছরেও।

গত ১৭ মাসে রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার বাজারে ছেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে বেসরকারি আমদানিকারকদের ডলার দিলেও এখন দিচ্ছে না। ডলার সংকটে আমদানির ঋণপত্র খোলা কমিয়ে দিয়েছে ব্যাংকগুলো।

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বর্তমানে নানা অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস রপ্তানি, রেমিট্যান্সপ্রবাহ, বিদেশি বিনিয়োগ-সব ক্ষেত্রেই মন্দাভাব বিরাজ করছে। রিজার্ভের ক্ষয় রোধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। প্রথমেই মুদ্রা পাচার বন্ধ করতে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। হুন্ডি বন্ধ করা সম্ভব হলে বাড়বে রেমিট্যান্সপ্রবাহ।

রিজার্ভ সংকট কাটানোর লক্ষ্যে এ মুহূর্তে রপ্তানি বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স আহরণ বাড়ানোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া দরকার। রপ্তানি আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে নিতে হবে বহুমুখী পদক্ষেপ। বিদেশে পড়ে থাকা রপ্তানি আয় দ্রুত দেশে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সুফল না পাওয়া গেলে আগামীতে ডলার সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।

ডলার সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নের জন্যও নিতে হবে পদক্ষেপ। আমদানি-রপ্তানিতে কারসাজি করে কেউ যাতে পার পেতে না পারে, তা নিশ্চিত করা দরকার। নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে কেন আগ্রহ বাড়ছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

অভিবাসন ব্যয় কমানো গেলে রেমিট্যান্সে এর প্রভাব পড়তে পারে। বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী প্রেরণে জোর দিতে হবে। দুর্নীতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ডলার সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে। কাজেই এ সংকট নিরসনে দুর্নীতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম