সময়মতো পাঠ্যবই প্রকাশ
জটিলতা ও অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ওঠা জরুরি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা গেছে, বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়। এবারও একই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রমে। এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ কোটির বেশি বই ছাপাতে হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে সময় বাকি মাত্র ১ মাস। অথচ এখনো অষ্টম ও নবম শ্রেণির ছয়টি বইয়ের পাণ্ডুলিপি হাতে পায়নি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের কয়েকটি বই ছাপানোর কাজ শুরু হলেও নবম শ্রেণির বেশিরভাগ বইয়ের মুদ্রণ শুরুই হয়নি। এখনো সব শ্রেণির বইয়ের মুদ্রণচুক্তি সম্পন্ন করতে পারেনি এনসিটিবি। ফলে নতুন বছরের শুরুতে বেশ কয়েকটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপার কাজ করছে এনসিটিবি। গত শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের বই ছাপানো নিয়ে বড় জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সেজন্য এবার প্রাথমিকের বই ছাপানোর কাজ আগে শুরু হয়েছে।
নতুন কারিকুলামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির প্রায় দেড় কোটি বই ছাপানো বাকি রয়েছে। সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের পাণ্ডুলিপি এখনো মুদ্রণে যায়নি। অষ্টম শ্রেণির ১৪টি বইয়ের মধ্যে ১১টির ডামি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির সাতটি বইয়ের ৪ কোটি বই ছাপানোর অনুমোদন হয়নি। এদিকে অষ্টম ও নবম শ্রেণি মিলে সাড়ে ৫ কোটি বই এখনো ছাপানো বাকি রয়েছে। বই ছাপার ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ৫০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে চুক্তি করে এনসিটিবি। অথচ এ বছরের বাকি আছে মাত্র এক মাস। এ সময়ের মধ্যে কোনো ছাপাখানাই এত বই ছাপিয়ে শেষ করতে পারবে বলে মনে হয় না। জানা যায়, টেন্ডার, কাজের চুক্তি, বিল পরিশোধ যথাসময়ে না করায় বই ছাপা নিয়ে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ জটিলতা কাটিয়ে উঠতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব আমাদের দেশের ওপর পড়লেও এটি যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর না পড়ে সেজন্য অন্য খাতে অর্থ কাটছাঁট করে বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপার কাজ অব্যাহত রয়েছে। এটি সরকারের প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছাবে, এটাই প্রত্যাশা।