স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট
সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঋতু পরিবর্তনকালে রাজশাহীতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে; রোগীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। এদিকে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় এপিএন স্যালাইনের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় রোগীর স্বজনরা চড়া দামে তা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সেসব স্যালাইন অস্বাভাবিক চড়া দামে বিক্রি করছেন।
রোগীর স্বজনরা ওষুধের দোকানে ৬৫ টাকার এপিএন স্যালাইন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ওষুধের দোকানদাররা ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন। এপিএন স্যালাইনের ৫০০ এমএল ব্যাগের গায়ে লেখা দাম ৬৫ দশমিক ২৫ টাকা; ১০০০ এমএলের দাম ৮৬ দশমিক ৩২ টাকা; ডিএনএস-১০ স্যালাইনের দাম ৮০ টাকার মধ্যে। অথচ এসব স্যালাইন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির রাজশাহী শাখার সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম শামীম বলেছেন, নিউমোনিয়া প্রতিরোধী এ ধরনের এক ব্যাগ স্যালাইনের সর্বোচ্চ দাম ১০০ টাকা হতে পারে। ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রির বিষয়টি খুবই অস্বাভাবিক। এমন অস্বাভাবিক দামে স্যালাইন বিক্রি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। জানা যায়, শিশুদের প্রাণরক্ষাকারী স্যালাইন ঘিরে রাজশাহীতে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। স্যালাইন প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো দাম না বাড়ালেও রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে কতিপয় ওষুধ ব্যবসায়ী অস্বাভাবিক দামে তা বিক্রি করছেন। আমরা মনে করি, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর পাশাপাশি ব্যবসায়ী নেতাদেরও ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত। তা না হলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পুরো ব্যবসায়ী সমাজের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে।
কিছুদিন আগে আমরা লক্ষ করেছি, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অস্বাভাবিক বেশি দামে তা বিক্রি করা হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কতটা বিপাকে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ নিতপণ্যের চড়া দামে এমনিতেই দিশেহারা। অর্থের অভাবে অনেকে সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। তা না হলে তাদের আরও বেপরোয়া হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।