নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু: দূষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আগামীকাল বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। দিনটি সামনে রেখে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি) গত বৃহস্পতিবার এক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। এ আলোচনাসভায় বিজ্ঞানীরা দেশের নিউমোনিয়া পরিস্থিতি নিয়ে কিছু উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেছেন। তারা জানিয়েছেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিবছর প্রায় ২৪ হাজার শিশু মারা যায়। এসব শিশুর মৃত্যু হয় পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই। প্রতি ঘণ্টায় শিশু মারা যায় আনুমানিক দুই থেকে তিনজন। বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে দেশে নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। বিষয়টি উদ্বেগজনক।
দেশে এখনো শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। যারা দীর্ঘদিন বিভিন্ন রোগে ভোগে বা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, এ ধরনের শিশুর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ রোগের প্রধান লক্ষণ জ্বর হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্বরের লক্ষণ থাকে অস্পষ্ট। এ কারণে কাশি, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। শিশুমৃত্যু রোধে এক বছর বয়সি শিশুদের নিউমোনিয়ার টিকাসহ অন্যসব টিকা সময়মতো দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে। নিউমোনিয়া রোধে শিশুর জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব অনেক। এতে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি ১৫ শতাংশ কম হয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। নিউমোনিয়া থেকে রেহাই পেতে শিশুকে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। নিউমোনিয়ার একটি বড় কারণ বায়ুদূষণ। ঘরের মধ্যে বাতাসের গুণগতমান উন্নত করার মাধ্যমে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি অর্ধেক করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বলার অপেক্ষা রাখে না, দরিদ্র বা নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর শিশুরা এক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। অপর এক তথ্য বলছে, নিউমোনিয়ার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসা শিশুদের একটি বড় অংশ রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতায় ভোগে। এ ধরনের শিশুদের মৃত্যুর আশঙ্কা অক্সিজেনস্বল্পতা না থাকা শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি। কাজেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রেও পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অক্সিজেন প্রদানের সরঞ্জামের অভাব দূর করা না হলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুমৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।