ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় অঞ্চল
দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঘূর্ণিঝড় হামুন শেষ মুহূর্তে দুর্বল হয়ে আঘাত হানলেও কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাবে যে ক্ষতি হয়েছে তার পরিমাণ কম নয়।
এ দুই জেলায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৪৩ হাজার ঘরবাড়ি। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা।
সড়কে গাছ উপড়ে এবং সেতু ভেঙে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কোনো কোনো সড়ক তলিয়ে গেছে। রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলে মানুষের ক্ষতি ও দুর্ভোগের বিষয়টি উপেক্ষণীয় নয়। এখন প্রয়োজন হামুনের আঘাতে উপকূলীয় অঞ্চলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো। যাদের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা, সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। ঘূর্ণিঝড় হামুনের ক্ষেত্রেও আগাম ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। উপকূলীয় মানুষ যে এ ব্যাপারে সতর্ক হয়ে উঠছে, এটি তারই প্রমাণ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ বা বন্ধ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে পূর্বপ্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
হামুনের আঘাতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জন্য ত্রাণ প্রেরণ ও পুনর্বাসনে নিতে হবে দ্রুত পদক্ষেপ। ত্রাণকাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অনেকের কৃষিক্ষেত্র, গবাদি পশু ও মৎস্যচাষের ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্গত এলাকায় ঘরবাড়ি, জমির ফসল হারিয়ে যারা দিনানিপাত করছেন, তাদের পুনর্বাসনে প্রশাসনকে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। উপকূলীয় এলাকার মানুষের মন থেকে আতঙ্ক কেটে গেলেও স্বস্তির যে অভাব রয়েছে, তা দূর করতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত যে ক্ষতি হয়েছে, সেসব মেরামতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
একই সঙ্গে ফসল ও ফসলি বাগানের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে কর্তৃপক্ষকে দাঁড়াতে হবে। দুর্গতরা যাতে দ্রুত বাড়িঘরে এসে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি এনজিওগুলোও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে এসে দাঁড়াবে, এটিই কাম্য।