জনস্বার্থ মামলার রায়, দ্রুত বাস্তবায়ন কাম্য
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![জনস্বার্থ মামলার রায়, দ্রুত বাস্তবায়ন কাম্য](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/10/15/image-728933-1697324327.jpeg)
দেশে অসংখ্য জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট মামলায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ বিভিন্ন সময়ে যুগান্তকারী নির্দেশনা বা রায় দিলেও কার্যত সেসবের বাস্তবায়ন খুব কমই হয়।
যেমন, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ কিংবা সেখানে জ্বালানি হিসাবে কাঠের ব্যবহার বন্ধ করা, ঢাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, শব্দদূষণ রোধ করা, রাস্তায় অবৈধ দখল বন্ধ করে মানুষের যাতায়াত সহজ করা, নদী খনন ও পলি অপসারণ, নদীর তীরে গাছ লাগানো, পাহাড় কাটা বন্ধ, জলাশয় ভরাট রোধ, কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত অবৈধ দখলমুক্ত করা, নদী-খাল উদ্ধার, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষা, বুড়িগঙ্গাসহ দেশের বৃহত্তর চার নদী রক্ষার মতো অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ রায় সর্বোচ্চ আদালত দিলেও তা বাস্তবায়নের হার খুবই কম।
জনস্বার্থ মামলার রায় বাস্তবায়িত না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ ও সাধারণ মানুষ। এক্ষেত্রে তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অবহেলার সুযোগ নেই। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এর উলটোটাই ঘটে বলে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও রায় আর বাস্তবায়িত হয় না। আবার রাজনৈতিক মদদপুষ্ট প্রভাবশালীদের কারণেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা তামিল করা সম্ভব হয় না। ফলে আইন না মানার এক ধরনের প্রবণতা তৈরি হয়। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় ও নির্দেশনা প্রতিপালন না করা আদালত অবমাননার শামিল। সংবিধানেই বলা আছে, প্রশাসন ও জনগণ সবাই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। অন্যথায় সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা যায়। এ ছাড়া যে কেউ আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করতে পারেন। কারণ সুপ্রিমকোর্ট একটি রায় দিলে সেটা ‘পাবলিক ডকুমেন্ট’ হয়ে যায়। এটাও মনে রাখতে হবে, সংবিধান নাগরিকদের যে অধিকার দিয়েছে, তা রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। অনেক ক্ষেত্রেই তা প্রতিপালিত না হওয়ায় জনস্বার্থে মামলা করা হয় সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মানতে বাধ্য করার জন্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জনস্বার্থে করা মামলার স্বীকৃত কোনো পরিসংখ্যান নেই। এ পরিসংখ্যানও প্রস্তুত করা দরকার। জনস্বার্থ মামলার রায় বা নির্দেশনা কঠোরভাবে পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা সরকার আরও আন্তরিক ও উদ্যোগী হবে, এটাই প্রত্যাশা।