সারের বাজারে নৈরাজ্য
ডিলারদের কারসাজি বন্ধ করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বোরো মৌসুম সামনে রেখে সারের বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি উদ্বেগজনক। ডিলারদের কারসাজির কারণে কৃষককে বাড়তি অর্থ দিতে হচ্ছে সারের পেছনে। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে কেন ইউরিয়া সার পাওয়া যাচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। ৩ এপ্রিল সব ধরনের সারের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এর সঙ্গে আরও প্রায় ৩ টাকা যোগ করে ৮ টাকা বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষককে। এভাবে ডিলাররা কৃষকের পকেট থেকে বেআইনিভাবে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তারা।
ডিলার পর্যায়ে কারসাজির মাধ্যমে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি নতুন নয়। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বর্তমানে সারের মজুত কম; কিন্তু চাহিদা বেশি। গ্যাসের অভাবে দেশের তিনটি সার কারখানা বন্ধ এবং আমদানির ক্ষেত্রে ডলার সংকট প্রকট-এ সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছেন ডিলাররা। আগামী জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বোরো ধান আবাদের মৌসুম। এছাড়া চলতি মাসের শেষদিকে শুরু হচ্ছে শীতকালীন সব ধরনের সবজি ও পেঁয়াজের আবাদ। নির্ধারিত দরের চেয়ে বাড়তি দাম গুনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় সার আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। জানা যায়, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি-এ তিন ধরনের সারের কোনো সংকট এ মুহূর্তে নেই। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ তিন ধরনের সারের কোনো সংকট হবে না। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুত আছে। প্রশ্ন হলো-এরপরও কেন সারের বাজার অস্থির?
এবার বর্ষা মৌসুমে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত হয়নি। এ কারণে আমন চাষ অনেকটাই সেচনির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে কৃষককে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়েছে। বস্তুত ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দেশের কৃষক। এ অবস্থায় সারের দাম নিয়ে কারসাজি করলে কৃষকের টিকে থাকাই কঠিন হবে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষক নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় কারসাজির মাধ্যমে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কেউ যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।