আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
রক্ষক কেন ভক্ষকের ভূমিকায়?
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানীতে ছিনতাই, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে অহরহ। ইদানীং ছিনতাইয়ের ক্ষেত্রে সালাম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ইত্যাদির তৎপরতা লক্ষণীয়। দেশে শিশু অপহরণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক সন্ত্রাসী আরেক সন্ত্রাসীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে মোটরসাইকেল আরোহী এক আইনজীবীর মাথায় সেই গুলি লাগে। তিনি এখনো জীবন সংকটে রয়েছেন। এসব ঘটনায় মানুষ যখন নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, তখন দিনদুপুরে ব্যাংকে ঢুকে পোশাকধারী দুই পুলিশ কনস্টেবল কর্তৃক ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা জনমনে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও ওই পুলিশ সদস্যদের আটক এবং ছিনতাইয়ের টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তবুও এ ঘটনা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কারণ পুলিশের অপরাধপ্রবণতার ঘটনা কেবল এই একটিই নয়, প্রায়ই ঘটছে। গতকালই যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর ডেমরায় পুলিশ ও চাঁদাবাজদের মধ্যে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ডেমরা-রামপুরা ও ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কে চাঁদাবাজি চলছে প্রকাশ্যে।
পুলিশ বাহিনীর একাংশের অপরাধপ্রবণতার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও পুলিশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্য নানা ধরনের অপরাধে লিপ্ত হয়েছিল। পুলিশের হাতে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত মেজর হত্যা পুলিশের অপরাধের একটি উদাহরণ। এ ছাড়া চাঁদাবাজি, অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়াসহ নানা ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে পুলিশের একাংশ জড়িত থেকেছে। পুলিশের ডিআইজি মিজানের কাহিনি তো একসময় ‘টক অফ দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছিল। জনগণের করের টাকায় বেতনভুক পুলিশ বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে-এটাই প্রত্যাশিত। অথচ তাদের একাংশ এই ব্রত পালন না করে গণবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। বিষয়টি শুধু অনভিপ্রেতই নয়, উদ্বেগজনকও বটে। পুলিশ বাহিনী যাতে নৈতিকতা ও মানবিকতার চর্চা করে এবং তাদের মধ্যে সেবাধর্মী মনোভাব জন্ম নেয়, প্রশিক্ষণের মধ্যেই সেই ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মনে করি আমরা। অপরাধী পুলিশ সদস্যদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না হলে পুলিশের অপরাধপ্রবণতা দূর করা যাবে না।