ক্যানসার সম্মেলন: গড়ে তুলতে হবে সহজলভ্য চিকিৎসাব্যবস্থা
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। শুক্রবার রাজধানীর এক হোটেলে দুদিনব্যাপী ‘অষ্টম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কংগ্রেস-২০২৩’ কনফারেন্স শেষ হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি অনেক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষক অংশ নিয়েছেন। এ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞদের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর আড়াই লাখ মানুষ নতুন করে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। মূলত খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খাদ্যে ভেজাল ও বায়ুদূষণের কারণে রোগটি বেশি হচ্ছে।
ক্যানসারকে বলা হয় মরণব্যাধি। এটি দুরারোগ্য ব্যাধি হলেও বর্তমানে এ ধারণা অনেক ক্ষেত্রে পুরোনো হয়ে গেছে। প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে ক্যানসার নিরাময়যোগ্য। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি পর্যায়ে শনাক্ত হলেও নিরাময় সম্ভব হতে পারে। তবে দ্রুত ক্যানসার শনাক্তের জন্য মানুষের সচেতনতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কিছু পরীক্ষা করালে শুরুতেই ক্যানসার শনাক্ত হতে পারে। বর্তমানে দেশে ক্যানসারের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কয়েকটি হাসপাতালে রয়েছে এ রোগের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। রয়েছে মানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তবে ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। তাই স্বল্পআয়ের মানুষের ক্যানসার চিকিৎসার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। কারও ক্যানসার শনাক্ত হলেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার একটি প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তুলনামূলক স্বল্প ব্যয়ে দেশেই উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা গেলে এ প্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
আমরা সবাই জানি, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই সবার আগে ক্যানসারের কারণগুলো দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে খাদ্যে ভেজাল ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে বায়ুদূষণ বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। এ দুটির রাশ টেনে ধরতে পারলে ক্যানসারের প্রকোপ কমে আসবে বলে আশা করা যায়। তাছাড়া জনগণের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।