নারী কর্মকর্তা অপহরণ
অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা থেকে প্রকাশ্যে একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে যেভাবে অপহরণ করা হয়েছিল, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জানা যায়, পঞ্চাশ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক নারী যুগ্মকমিশনারকে অপহরণের পর নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়।
প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর তিনি কৌশলে মুক্তি পান। গত শুক্রবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। নির্যাতনে তার একটি পা ভেঙে গেছে, চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মাথা ফেটে গেছে। দুখঃজনক হলো, দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরও অপহরণকারীদের মন গলেনি।
অপহরণকারীরা মুক্তিপণের পুরো অর্থ আদায়ের জন্য ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালায়। অপহরণের শিকার নারী এখন রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা যায়, ১৮ আগস্ট রাত ৮টার দিকে বড় মগবাজার থেকে নিজ গাড়িতে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ফিরছিলেন ওই নারী। ফেরার পথে তিনি অপহরণের শিকার হন। সঙ্গে গাড়িচালক থাকা সত্ত্বেও একজন নারীর অপহরণের শিকার হওয়ার ঘটনায় দেশের নাগরিকরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন। এটা কি অপহরণের ঘটনা, নাকি এর পেছনে অন্য রহস্য আছে তা দ্রুত উদ্ঘাটন করা দরকার।
সবুজবাগের একটি বাসার গ্যারেজে গাড়িতেই আটকে রেখে ওই নারীর ওপর রাতভর নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনের সময় তার চিৎকার যাতে বাইরে না যায়, সেজন্য তার মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে তার ওপর নির্যাতন। ওই নারীর সঙ্গে থাকা দেড় লাখ টাকা ও একটি দামি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় অপরাধীরা।
দুপুর ২টার পর দুর্বৃত্তরা তাদের চক্রের দুই-তিনজনকে গাড়ির পাহারায় রেখে খাবার কিনতে যায়। এ সুযোগে ওই নারী কৌশলে গাড়ি থেকে নেমে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, অপহরণের শিকার ওই নারীর সাবেক গাড়িচালক একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য; সে-ই পরিকল্পনা করে তার চক্রের সদস্যদের তথ্য দেয় যে ওই নারীকে অপহরণ করা গেলে তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা সম্ভব।
এ কারণেই সহযোগীদের নিয়ে ওই ব্যক্তি এ ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের বিষয়টি উদ্বেগজনক। মানুষ কেন এত বেপরোয়া হয়ে উঠছে, কেনই বা ঘটছে তাদের নৈতিক অবক্ষয়, এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজাও জরুরি। মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঠেকাতেও পদক্ষেপ নিতে হবে।