পুরোনো যানবাহন
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![পুরোনো যানবাহন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/08/08/image-704569-1691453641.jpg)
ফাইল ছবি
বাস ও ট্রাকের আয়ুষ্কাল নির্ধারণসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের চাপের মুখে তা স্থগিত করেছে সরকার। সড়ক দুর্ঘটনা ও পরিবেশ দূষণের বড় কারণ পুরোনো যানবাহন-এ বিবেচনায় ২০ বছরের পুরোনো বাস এবং ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত ১৭ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ।
পরিবহণ নেতারা ওই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তা স্থগিতের দাবি জানিয়ে চিঠি দেন। যুক্তি হিসাবে তারা উল্লেখ করেন, বিপুলসংখ্যক যানবাহন তুলে দিলে যে শূন্যতা তৈরি হবে, তার প্রভাব যাত্রী পরিবহণ ও বাণিজ্যে পড়বে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আসল কথা হলো, এর মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে পুরোনো লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন অবাধে চলাচলের পরিস্থিতিই বহাল রইল। যেখানে খোদ পরিবহণ মালিকরাই বলছেন, সড়কে চলাচলরত যানবাহনের অধিকাংশই পুরোনো এবং তা তুলে নিলে শূন্যতার সৃষ্টি হবে, সেখানে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, এতদিন কেন নতুন যানবাহন সড়কে নামানোর উদ্যোগ নেওয়া হলো না?
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সংসদে দাঁড়িয়ে রাজধানীর যানজট মোকাবিলা এবং নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরোনো যানবাহন নিষিদ্ধের পাশাপাশি অধিকসংখ্যক বাস ও ডবল ডেকার এবং মানসম্মত ট্যাক্সিক্যাব চালুর উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু বাস্তবে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি আমাদের।
কিছু নতুন বাস চালু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। পণ্য পরিবহণে ব্যবহৃত ট্রাকসহ মালবাহী যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। চোখে পড়েনি অবৈধ ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে বিআরটিএর মোবাইল কোর্টের নিয়মিত কার্যক্রমও।
দেশে সড়ক-মহাসড়কে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তার অন্যতম কারণ পুরোনো ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন। সড়ক-মহাসড়কগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হওয়ার অন্যতম কারণও এসব যানবাহন এবং চালকদের অদক্ষতা। কর্তৃপক্ষের তরফে একদিকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কথা বলা হচ্ছে; কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটছে না।
এর পেছনে পরিবহণ মালিকদের প্রভাবের যে অভিযোগ ছিল, প্রজ্ঞাপন স্থগিতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে তারই যেন প্রতিফলন ঘটল। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশের সড়ক থেকে পুরোনো যানবাহন দ্রুত তুলে নেওয়া এবং পর্যাপ্তসংখ্যক নতুন বাস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি, যাতে পরিবহণ মালিকরা শূন্যতা সৃষ্টির যে জুজু দেখাচ্ছেন, তার নিরসন হয়।