অগ্নিঝুঁকি বিষয়ে গোলটেবিল
দুর্যোগের আগেই দরকার প্রতিরোধব্যবস্থা
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যে কোনো দুর্যোগের পর কার্যক্রম পরিচালনার চেয়ে দুর্যোগ আসার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তাহলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়। অগ্ন্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা রোধে, যেমন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার, আবাসিক ভবনে মিশ্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা এবং আইন ও বিধিমালা মেনে চলার বিষয়ে সব পক্ষেরই সচেতন থাকা দরকার।
গত মঙ্গলবার যুগান্তর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জলবায়ু ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ডিজি ইকো প্রকল্পের আয়োজনে ‘সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণ : নগর দুর্যোগ মোকাবিলা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তাদের কাছ থেকে এসব কথাই উঠে আসে। আলোচনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষার জন্য জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোনো দুর্যোগে ফায়ার সার্ভিস সবার আগে গেলেও এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রাজউক ও সিটি করপোরেশনের ব্যাপক ভূমিকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে অন্যসব বিভাগের মধ্যেও সমন্বয় দরকার। এক্ষেত্রে যে কোনো দুর্ঘটনায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রিভেনশন মডিউলের কথা বলেছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উপমহাসচিব সুলতান আহমেদ। তিনি বলেছেন, রেড ক্রিসেন্টের যেমন সাত লাখ ভলান্টিয়ার আছে, তেমনি সব সংস্থার ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পর্যায়ের মডিউল তৈরি করতে হবে।
অতীতে পুরান ঢাকার নিমতলীসহ একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধারে প্রশিক্ষিত বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয়সহ সর্বস্তরের স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণ কতটা সহায়ক হয়েছে, তা আমরা দেখেছি। বিশেষ করে যে কোনো দুর্ঘটনায় প্রশিক্ষিত বাহিনী পৌঁছানোর আগে স্থানীয় এবং ঘটনাস্থলের মানুষদেরই উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তারা কী সুপারিশ দেয়, তা প্রায়ই জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হয় না। আবার কোনো ভবনে অগ্নিকাণ্ড বা যে কোনো দুর্ঘটনায় শুধু ভবন মালিকের ওপর দায় চাপিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তা না করে বরং সংশ্লিষ্ট যেসব পক্ষের দায় আছে, তাদের সবাইকেই শাস্তির আওতায় আনা উচিত। নগরে অগ্নিকাণ্ড বড় ঝুঁকি হলেও তা দেশের অন্যান্য শহরেও বিদ্যমান। এমনকি গ্রাম এলাকাতেও অগ্নিঝুঁকি আছে। কাজেই সমন্বিত সচেতন কার্যক্রম এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। কোনো দুর্ঘটনাই কাঙ্ক্ষিত নয়, তবে সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হলে অনেক দুর্ঘটনাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।