Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

প্রশ্নফাঁস মামলার চার্জশিট

সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত হোক বিমান

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রশ্নফাঁস মামলার চার্জশিট

বিমান এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ

বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সংস্থাটির ডিজিএমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে ২৬ জন বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাকি চারজন চাকরিপ্রত্যাশী। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা অসৎ উদ্দেশ্যে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, সংগ্রহ, বিতরণ ও কেনাবেচা করে আসছিলেন। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর বিমানের ১০০ চালকসহ কয়েকটি পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এর একদিন আগে ২০ অক্টোবর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। গোয়েন্দা পুলিশ ওই দিন বিকালে উত্তরসংবলিত ৮০টি প্রশ্নপত্র উদ্ধার করে। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় গত বছরের ২৬ অক্টোবর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপপরিদর্শক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আমরা আশা করব, আদালতে চার্জশিট দাখিলের মধ্য দিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে এবং যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের উপযুক্ত শাস্তি হবে। এটা করা গেলে এ ধরনের দুর্নীতির পথ রুদ্ধ হবে।

শুধু ওই নিয়োগ পরীক্ষাই নয়, এর আগেও বিমানের নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। বস্তুত নানা বিষয়ে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বহু পুরোনো। নিয়োগ-পদোন্নতি, লিজ নবায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, ওভারহোলিং, গ্রাউন্ড সার্ভিস, কার্গো পরিবহণ, টিকিট কেনাবেচাসহ প্রায় সব খাতেই দেখা গেছে দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য। ২০১৯ সালের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বিমান মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এ সংস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে ক্রাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছিল। সে সময় বিমানের তৎকালীন এমডিসহ অর্ধশত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কার, ওএসডি ও চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল সংস্থাটির ওপর। মাত্র ৯ মাসে বিমান লাভ করেছিল ৪৬০ কোটি টাকা। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দুর্নীতিবাজরা আবার ঘাঁটি গাড়ে এ সংস্থায়। এদের স্থায়ীভাবে নির্মূল করা জরুরি।

বিমান এদেশের জাতীয় পতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় সংস্থা। এ সংস্থার উড়োজাহাজে সর্বদা দক্ষ ও অভিজ্ঞ পাইলট নিয়োগ দেওয়া হবে, এটাই কাম্য। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট এয়ারক্রাফটগুলো এবং এর যাত্রীরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এর সঙ্গে গোটা সংস্থার ভাবমূর্তির প্রশ্নটিও জড়িত। কাজেই বিমানের উড়োজাহাজ কোনোমতেই অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ পাইলটদের হাতে ছেড়ে দেওয়া সমীচীন নয়। কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অথবা অন্য কোনোভাবে পাইলট নিয়োগের তৎপরতা চালালে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে অবশ্যই। শুধু পাইলট নয়, যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ হতে হবে সঠিক পন্থায়, যথাযথ বিধি মোতাবেক। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি যেন না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকতে হবে। বিমানকে সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত করে একটি লাভজনক সংস্থায় পরিণত করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম