Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সাংবাদিক হত্যা: বিচারহীনতার সংস্কৃতি রোধ করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাংবাদিক হত্যা: বিচারহীনতার সংস্কৃতি রোধ করতে হবে

 

জানা যায়, অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে খবর প্রকাশকে কেন্দ্র করে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ১৪ মে ময়মনসিংহ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে গোলাম রাব্বানীর নামে ডিজিটাল আইনে মামলাও করেছিলেন ওই চেয়ারম্যান। কিন্তু ১৪ জুন ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। এর জের ধরে সেদিনই তাকে হত্যা করা হয়, যার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে ওই চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। তবে পুলিশ তাকে আটক করেনি। হত্যাকাণ্ডের আগে জীবন সংশয় নিয়ে একটি ভিডিও পোস্টও দিয়েছিলেন নিহত রাব্বানী। বাস্তবে তার সেই শঙ্কাই সত্যি হলো।

দেশে ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও বেশিরভাগ ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচার বা শাস্তি হয়নি। সাংবাদিকতা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পেশা, এটা ঠিক। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালন করার কারণে কেউ খুন বা নির্যাতিত হবেন এবং তার বিচার হবে না, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনী। এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খুনিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের এক দশক পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি বিচারকাজ। দেখা যাচ্ছে, দেশে সাংবাদিক হত্যার বিচার ঝুলে যাচ্ছে দীর্ঘসূত্রতায়।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, সাংবাদিক হত্যা, গুম, খুন, অপহরণের শিকারের ঘটনায় জড়িতদের বিচার হওয়ার নজির খুব কম।

বিচারহীনতার বিষয়টি শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো বিশ্বেই দেখা যায়। গেল বছর ইউনেস্কো এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাগুলোর বেশিরভাগেরই বিচার হয় না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার অভিযোগের বিষয়ে সংস্থাটি যথাযথ তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। পাশাপাশি দেশগুলোকে গণমাধ্যম সুরক্ষা আইন প্রণয়ন কিংবা এ সংক্রান্ত কার্যকর নীতি বাস্তবায়ন করতেও পরামর্শ দিয়েছে।

সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে সাংবাদিকতা একটি মহৎ পেশা। তবে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের ওপর এ ধরনের আঘাত সংশ্লিষ্ট দেশের জন্যও অশনিসংকেত বৈকি। বিচারিক তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা ও বিচারহীনতার যে সংস্কৃতির কারণে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে, তার অবসানে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা। গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যায় জড়িতরা যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম