আরপিও সংশোধনী: ইসির ক্ষমতা বৃদ্ধিই হওয়া উচিত লক্ষ্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২০ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে দেওয়া হয় এ অনুমোদন। যেসব ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হলো বিদ্যমান আইনের ৯১ ধারা। এ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন চলাকালে অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এক্ষেত্রে সংশোধনীর মাধ্যমে যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা হলো, নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে অনিয়ম হলে কেবল সেই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করার ক্ষমতা থাকবে ইসির। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আইনত খর্ব হতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম দেখে মাঝপথে পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছিল ইসি। আরপিও সংশোধন হলে ইসির এ ধরনের ক্ষমতা রহিত হবে।
দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা। সেক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-ভোট বাতিলে ইসির ক্ষমতা এবং ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা, সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে শাস্তি নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। এসব পদক্ষেপ নেওয়া হলে নির্বাচনি ব্যবস্থার ওপর নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব যেমন বাড়বে, তেমনি তা নির্বাচনের অনিয়ম রোধেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। বিশেষ করে যারা ভোটকেন্দ্রে ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করেন, তাদের জন্য এটি সতর্কবার্তা হিসাবে কাজ করবে।
অনেক সময় সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভোটকেন্দ্রে দলীয় মাস্তানদের হাতে নিগৃহীত ও হয়রানির শিকার হন, যা অনেক সময় ফৌজদারি আদালতে প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনি আইনে সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া জরুরি। বস্তুত নির্বাচনসংক্রান্ত যে কোনো ক্ষমতা ইসির হাতে থাকলে এবং এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত হলে নির্বাচন নিয়ে সব ধরনের বিতর্কের অবসান হতে পারে বলে মনে করি আমরা।