Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

দুর্দশাগ্রস্ত স্বাস্থ্যসেবা, উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসার এ হাল আর কতদিন?

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্দশাগ্রস্ত স্বাস্থ্যসেবা, উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসার এ হাল আর কতদিন?

দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা বিরাজ করার বিষয়টি উদ্বেগজনক।

গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত একগুচ্ছ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি থাকলেও সেগুলো পড়ে আছে অযত্নে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এক্স-রে মেশিন অচল হয়ে পড়ে রয়েছে।

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে টেকনিশিয়ানের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে একমাত্র এক্স-রে মেশিন। এটি ঠিক করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙেনি দীর্ঘ ২৫ বছরেও।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিন থাকলেও টেকনিশিয়ান নেই পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে, যে কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। যশোরের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতির অভাবে ১৫ বছর ধরে দাঁতের চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। অথচ এ বিভাগে দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। তারা কেবল রোগীদের পরামর্শ দেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর আগে। শয্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পদ সৃষ্টি হলেও আজও কোনো বিভাগে লোকবল বাড়ানো হয়নি। এ হাসপাতালে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে নেই এক্স-রে টেকনিশিয়ান। এভাবেই দেশে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে আধুনিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

চাহিদামতো সরকারি সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে মানুষ অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ হাসপাতালসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি হাসপাতালে কিছু যন্ত্রপাতি থাকলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় তারা রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। এদিকে বিভিন্ন স্থানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রাখার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জটিল রোগীদের চিকিৎসাসেবা কতটা নাজুক তা বারবার আলোচনায় আসে। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে রোগীরা চিকিৎসার জন্য রাজধানীমুখী হবে। যাদের সামর্থ্য সীমিত, তাদের পক্ষে রাজধানীতে গিয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। চিকিৎসা খাতের এমন বেহাল দশা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যেহেতু এর সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত, সেহেতু স্বাস্থ্য খাতের সমস্যার সামাধানে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। মানুষ যাতে জেলা-উপজেলা পর্যায়েই আধুনিক চিকিৎসাসেবা পেতে পারে সে পদক্ষেপ নিতে হবে। চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম